নিজস্ব সংবাদদাতা: পাকিস্তানের সিন্ধু নদের বুকেই লুকিয়ে আছে বিপুল সোনার ভাণ্ডার। এমনই দাবি করা হয়েছে একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে। এই সোনা উত্তোলন করা সম্ভব হলে, অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের ভাগ্যবদল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের অ্যাটক অঞ্চলের কাছে সিন্ধু নদের তলদেশে প্রায় ৩২.৬ টন সোনা লুকিয়ে থাকতে পারে। এর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সোনা কয়েক লক্ষ বছর ধরে হিমালয়ের পাহাড় থেকে সিন্ধু নদ দিয়ে বয়ে এসেছে। সিন্ধু নদের তীরেই এক সময় গড়ে উঠেছিল সিন্ধু সভ্যতা, যা খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৩০০-র মধ্যে বিস্তৃত ছিল। সেই নদের তলদেশেই সোনা জমে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে চলছে গবেষণা। নবভারত টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে সোনা নদীতে মিশে গিয়ে দীর্ঘ সময়ের মধ্যে অ্যাটক এলাকায় এসে জমা হয়েছে।
সোনার ভাণ্ডারের খবর প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয় বাসিন্দারা বেআইনি খনন শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাকিস্তানের খনিজ মন্ত্রকের আধিকারিকরা অবশ্য এই বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, সরকার সোনা উত্তোলনের উদ্যোগ না নিয়ে বালি এবং স্টোন জিঙ্ক খননের জন্য জমি বরাদ্দ করছে। যদিও সিন্ধু নদে থাকা সোনা উত্তোলন আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এবং দক্ষতা ছাড়াই এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন। তবে যদি সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে শুধু পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট কাটবে না, বহু কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হতে পারে।
৬০০ বিলিয়ন রুপি মূল্যের এই সোনা পাকিস্তানের বিপুল ঋণ পরিশোধে সহায়তা করতে পারে। সোনা উত্তোলনের কাজ শুরু হলে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। তবে বেআইনি খনন বন্ধ করা এবং প্রকৃত সম্ভাবনা যাচাই করে পরিকল্পনা করা পাকিস্তান সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এই সোনা উত্তোলন করা কার্যত অসম্ভব।
সিন্ধু নদের সোনা পাকিস্তানের জন্য আশার আলো হতে পারে। তবে তার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা এবং বেআইনি কার্যকলাপের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ। এখন দেখার, এই ভাণ্ডার দেশটির অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করতে পারে কি না।