বন্যা-ধসে বিপর্যস্ত নেপাল, বাড়ছে মৃত্যুসংখ্যা

নেপালে বন্যার কারণে ৯০০ বিদেশি নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং উদ্ধার কার্যক্রমে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

author-image
Debapriya Sarkar
New Update

নিজস্ব প্রতিবেদন : বন্যায় বিপর্যস্ত নেপালে মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত ২৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, এবং অন্তত ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। বন্যাকবলিত অঞ্চল থেকে ৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে, তবে এখনও বহু ব্যক্তি জলবন্দি হয়ে আটকে আছেন। নেপাল সরকার জানিয়েছে, ত্রাণ কার্যক্রম ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। উদ্ধার ও ত্রাণ কাজের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে, যাতে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারে ক্ষতিগ্রস্তরা।

publive-image

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে ধস নেমে ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি সাংবাদিক বৈঠকে সরকারি তল্লাশি ও উদ্ধার কাজে দেরির অভিযোগ মেনে নেন এবং জানান, ত্রাণ পৌঁছে দিতে সরকার সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে। গৃহহীনদের পুনর্বাসন কাজও শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৪ হাজার ৩৩১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, তবে কিছু অঞ্চলে ত্রাণ কাজে খামতি রয়ে গেছে। ৪৮ ঘণ্টার অবিরাম ভারী বৃষ্টিতে যে বিপর্যয় ঘটেছে, তা পূর্বাভাস করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সরকারি আধিকারিকরা। চিফ সেক্রেটারি একনারায়ণ আরিয়াল জানিয়েছেন, বন্যা ও ধসের ফলে দেশের ক্ষতি প্রায় ১৭০০ কোটি ডলার হয়েছে।

publive-image

গত দু'দিনে নেপালের বন্যা কবলিত বিভিন্ন স্থান থেকে ৯০০ বিদেশি নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রেকিং করতে গিয়ে আটকে পড়া এই নাগরিকদের হেলিকপ্টার পাঠিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র ঋষিরাম তিওয়ারি জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজে কোনো খামতি রাখা হচ্ছে না। সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার রবিবার ৪২৫ জন এবং সোমবার ২৫৮ জনকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকার্যে সরকার ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বেসরকারি হেলিকপ্টারও ভাড়া করা হয়েছে, বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলে ধস নেমেছে এমন জায়গাগুলোতে। বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে, এবং শনিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির ফলে বহু মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন। পূর্ব ও মধ্য নেপালে বন্যার প্রকোপ বেশি, তবে রবিবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি দেখা যাচ্ছে।

publive-image

এখন উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন প্রায় ২০ হাজার নিরাপত্তাকর্মী, সেনা ও পুলিশ, এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনকে নেপালের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছেন, বলছেন এশিয়ায় বর্ষাকালের পরিবর্তন এবং বৃক্ষনিধনের ফলে频繁 বন্যার ঘটনা ঘটছে। ধসের কারণে এখনও অনেক এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।