হাবিবুর রহমান, ঢাকা: বাংলাদেশে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুক্রবার ফজরের নামাজের পর থেকে শুরু হয়েছে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা। ৬৪ জেলার মধ্যে প্রথম পর্বে ৩২ জেলার মানুষ বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিয়েছেন। লাখ লাখ মুসল্লির পদভারে মুখরিত ইজতেমা ময়দান। ইজতেমার মূলপ্যান্ডেল পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ময়দানে জায়গা না পেয়ে ময়দানের সামনে রাস্তার পাশে ফুটপাতে তাবু টেনে বসে পড়ছে জামাতী মুসল্লিরা।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম দিন শুক্রবার হওয়ায় স্মরণকালে সবচে বড় জুমার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে জু’মার জামাত শুরু হয়। ওই নামাজের ইমামতি করেন বাংলাদেশের মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের। ইজতেমায় যোগদানকারী মুসল্লি ছাড়াও জু’মার নামাজে অংশ নিতে ঢাকা, সাভার, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমাস্থলে হাজির হন। ভোর থেকেই ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে ইজতেমা মাঠের দিকে মানুষের ঢল নামে। দুপুর ১২টার দিকে ইজতেমা মাঠ উপচে আশপাশের খোলা জায়গা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এছাড়া টঙ্গীর বিভিন্ন উচু ভবনের ছাদ ও নৌকা থেকেও মুসল্লিরা জুমার নামাজে শরিক হন। মাঠে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা মহাসড়ক ও অলি-গলিসহ যে যেখানে পেরেছেন পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ বিছিয়ে জু’মার নামাজে শরিক হয়েছেন। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-আশুলিয়া, ঢাকা-কালীগঞ্জসহ চারপাশের সড়ক-মহাসড়কে প্রচুর ভিড়। মুসল্লিদের টঙ্গীমুখী যাত্রার কারণে রাস্তায় যানবাহন কমে যাওয়ায় মানুষ পায়ে হেঁটে ময়দানে আসছেন। ইতোমধ্যে যারা ইজতেমা ময়দানে জামাত নিয়ে এসেছেন, তাদের ছাড়াও অনেক মানুষ শুধু জুমার নামাজ আদায় করতে ইজতেমা মাঠে আসছেন। জুমার নামাজের পর ভিড় কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন মুসল্লিরা। কালিয়াকৈর থেকে আসা মুসল্লি আকবর আলী জানান, বড় জামাতে নামাজ আদায় করার অনেক ফজিলত। তাই জুমার নামাজ আদায়ের জন্য ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। রাস্তায় যানবাহনে প্রচুর ভিড় থাকায় ইজতেমা ময়দান পর্যন্ত পৌঁছাতে অনেক কষ্ট হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় আঞ্চলিক বয়ান। শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে আগামী রবিবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে প্রথম পর্ব বিশ্ব ইজতেমা। এরপর আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় পর্ব।