হাবিবুর রহমান, ঢাকা: আবারও বাংলাদেশে (Bangladesh) এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল। মুহুর্মুহু গুলি চলল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। যার জেরে মৃত্যু হল বহু মানুষের। জানা গিয়েছে, ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের জেরে বাংলাদেশের কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে ফের বড় ধরণের গুলিযুদ্ধে ৫ জন নিহত হয়েছে। সন্ত্রাসী আরসা ও আরএসও নামে দুটি বিবদমান গ্রুপের নাম উঠে এসেছে। কক্সবাজারের উখিয়ায় শুক্রবার ভোরে এই গুলির ঘটে। নিহতরা হলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৮ ওয়েস্ট বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ হামিম, ক্যাম্প-১৩ এর নুরুল আমিন ও ক্যাম্প-১০ এর নজিমুল্লাহ। আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কিছু দিন ধরে ওই দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই সূত্রে ধরেই শুক্রবার ভোরে দুই গ্রুপের মধ্যে গুলিযুদ্ধ শুরু হয়। এ ঘটনায় পুরো ক্যাম্পজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এই নিয়ে গত দুই মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। এর আগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একইভাবে গোলাগুলিতে শতাধিক রোহিঙ্গার মৃত্যুর খবর মিলেছিল। তবে ক্যাম্পের একটি মাদ্রাসায় নির্বিচারে গুলি চালিয়ে একসঙ্গে ছয়জন নিহতের পর একসঙ্গে একজন দুজনের বেশি খুন হওয়ার ঘটনা ছিল না। শুক্রবার ভোরে আবারও একসঙ্গে ৫ জনের খুনের ঘটনা ঘটল।
রোহিঙ্গা শিবিরে আইন-শৃঙ্খলায় দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএন অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) আমির জাফর জানান, শুক্রবার ভোরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই দল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গুলিযুদ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ কাণ্ডে জখম আরও ২ জনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারাও সেখানে মারা যান। অভিযুক্তদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মহম্মদ আলী বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে এপিবিএন ও পুলিশের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে পাঁচজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইওএম পরিচালিত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন, ক্যাম্প এলাকায় পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।