নিজস্ব সংবাদদাতা : কাজাখস্তানে আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান দুর্ঘটনায় ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর শোকের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তবে রাশিয়ার সরকারি চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। শুক্রবার, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল Rossiya-24 এ দুর্ঘটনার রিপোর্টে বিমানটি গুলি করে ভূপাতিত হওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়নি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দুর্ঘটনাটি নিয়ে অল্প কথায় মন্তব্য করেছেন, এবং তিনি কোনো ধরনের মূল্যায়ন না করার পক্ষে কথা বলেছেন, যতক্ষণ না তদন্তের ফলাফল প্রকাশিত হয়।
পেসকভের মন্তব্য রাশিয়ান মিডিয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সুর নির্ধারণ করতে পারে, কিন্তু বিমানটির শরীরে দেখা গিয়েছে এমন ক্ষত, যা শ্যাপনেল বা ধ্বংসাবশেষের ক্ষতির মতো মনে হচ্ছে, এটি ক্রেমলিনের জন্য একটি জন-সম্পর্কের সমস্যা তৈরি করছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিমানটিতে রাশিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান এবং কিরগিজস্তানের নাগরিকরা ছিলেন। রাশিয়ার শহরগুলোতে কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা তাদের ফ্লাইট স্থগিত করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এই দুর্ঘটনাটি চেচনিয়ার দিকে যাওয়া রাশিয়ান বিমান সম্পর্কিত একটি সংবেদনশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, কারণ চেচনিয়া রুশ সরকারপন্থী নেতা রমজান কাদিরভের শাসনে রয়েছে। রাশিয়ান রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক আলেকজান্ডার বাউনভ এই দুর্ঘটনার কভারেজের অস্পষ্টতার প্রতি আঙ্গুল তোলেন এবং প্রশ্ন তোলেন যে ক্রেমলিন এই ঘটনার দায় নিবে কিনা। তিনি এই ঘটনাকে "মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের MH17 দুর্ঘটনার মতো পরিচালিত হবে কিনা"—এমন এক পরিস্থিতি হিসেবে তুলনা করেছেন, যেখানে বিভ্রান্তি ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে ঘটনা আড়াল করা হয়েছিল।
২০১৪ সালে ইউক্রেনে MH17 ভূপাতিত হওয়ার পর রাশিয়া থেকে ছড়ানো হয়েছিল বিভ্রান্তিকর তথ্যের এক তুষারঝড়। রাশিয়ান মিডিয়াতে বলা হয়েছিল ইউক্রেনীয় বাহিনী বিমানটি গুলি করেছে, বা রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিমান ছিল প্রকৃত লক্ষ্য। এই বিভ্রান্তিকর কভারেজটি আসল ঘটনা—রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আক্রমণ—থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে, আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে, তবে এটি যে বিভ্রান্তির পর্দায় আড়াল হয়ে যাবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।