নিজস্ব সংবাদদাতা: চীনের বিজ্ঞানীরা ইবোলা (Ebola) ভাইরাসের দেহ থেকে কিছু অংশ-বিশেষ নিয়ে নতুন একটি প্রজাতির ভাইরাস তৈরি করেছেন। মূলত, ইবোলা ভাইরাসের দ্বারা সংক্রামিত রোগ এবং এর লক্ষণগুলিকে অধ্যয়ন করার জন্য এই ভাইরাস তৈরি করেছেন তারা। হেবেই মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরীক্ষা সম্পর্কিত বিস্তারিত গবেষণাটি সায়েন্স ডাইরেক্টে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা গবেষণায় উল্লেখ করেছেন যে, তারা এই প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে একদল হ্যামস্টারের শরীরে ইনজেকশন-এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনার তিন দিনের মধ্যে ওই সব হ্যামস্টার মারা যায়। তারা আরও বলেন, "মানুষের মত হ্যামস্টাররাও গুরুতর সিস্টেমিক রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের মাল্টি-অর্গান ফেইলিওরও হয়েছিল।"
এই গবেষণার জন্য, চীনা বিজ্ঞানীরা গবাদি পশুদের দেহে পাওয়া একটি সংক্রামক রোগের ভাইরাস এবং ইবোলায় পাওয়া একটি প্রোটিন যুক্ত করেছিল, যা ভাইরাসটিকে দেহের কোষগুলিকে সংক্রামিত করতে এবং মানবদেহে ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে।
হ্যামস্টারদের শরীরে ইনজেকশন দেওয়ার পরে, কিছু হ্যামস্টারদের চোখে স্রাব নিঃসরণ লক্ষ্য করা যায়, যা তাদের চোখের মণিকে সম্পূর্ণভাবে ঢেকে ফেলে এবং তারা অন্ধ হয়ে যায়।
গবেষকরা বলেছেন, " এটা এমন একটি লক্ষণ, যা দেখে বোঝা যায় যে, ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত তিন সপ্তাহ বয়সী সিরিয়াল হ্যামস্টারদের ইভিডি দ্বারা সৃষ্ট অপটিক স্নায়ুর ব্যাধিগুলি এই গবেষণায় যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।"
সম্প্রতি মহামারী সৃষ্টিকারী করোনা ভাইরাসের ল্যাব লিক সম্পর্কে গবেষকরা বলেছেন যে, তাদের লক্ষ্য ছিল সঠিক প্রাণী মডেল খুঁজে বের করা যা ল্যাব সেটিংয়ে নিরাপদে ইবোলার লক্ষণগুলি অনুকরণ করতে পারে। ইবোলার মত একটি ভাইরাসের জন্য অত্যন্ত সুরক্ষিত সুবিধা প্রয়োজন যা বায়োসেফটি লেভেল ৪ (BSL-4) নামে পরিচিত। বিশ্বের বেশিরভাগ ল্যাবে বায়োসেফটি লেভেল ২ নিয়ে কাজ করা হয়।
অধ্যয়নের এই বিষয়গুলিতে পাঁচটি মহিলা এবং পাঁচটি পুরুষ হ্যামস্টার অন্তর্ভুক্ত ছিল। মৃত প্রাণীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করে তারা দেখতে পেয়েছিল যে, হৃৎপিণ্ড, লিভার, প্লীহা, ফুসফুস, কিডনি, পাকস্থলী, অন্ত্র, মস্তিষ্কের টিস্যুতে ভাইরাস জমে ছিল।