হাবিবুর রহমান, ঢাকা: বাংলাদেশে নির্বাহী আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও দলটির ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির এবং তাদের সব অঙ্গসংগঠনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষিদ্ধ ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে টহল ও চেকপোস্ট জোরদার করা হয়েছে। তবে নিষিদ্ধ হওয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে মোকাবিলার প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এর আগেও ১৯৫৯ সালে পাকিস্তানে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ১৯৬৪ সালে আবারও নিষিদ্ধ করা হয় জামায়াতকে।
এছাড়াও বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এর অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধে দায়ী হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। এছাড়া হাইকোর্ট বিভাগের এক রিট পিটিশনের রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছেন। আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের ওই রায়কে বহাল রেখেছেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। এতে আরও বলা হয়, সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এর অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল। সরকার বিশ্বাস করে যে, জামায়াত ও শিবিরসহ এর সব অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাই ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮(১) এ দেওয়া ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ এর সব অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো। এ আইনের তফসিল-২ এ জামায়াত ও ছাত্রশিবিরসহ এর সব অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করলো বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।