ফের অনুপ্রবেশের চেষ্টা! মাঝ সমুদ্রে প্রাণ হারালেন ৪৪ জন পাকিস্তানি

আফ্রিকা থেকে ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে নৌকা দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু অভিবাসী।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
pakistanan


নিজস্ব সংবাদদাতা: আফ্রিকা থেকে ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে নৌকা দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু অভিবাসী। শরণার্থীদের অধিকার রক্ষা গোষ্ঠী ‘ওয়াকিং বর্ডারস’-এর দাবি অনুযায়ী, এই মর্মান্তিক ঘটনায় অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৪ জন পাকিস্তানি।

জানা গিয়েছে, ২ জানুয়ারি মরিশানিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেছিল অভিবাসী বোঝাই একটি নৌকা। স্পেন পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা করা নৌকাটিতে ৮৮ জন ছিলেন, যার মধ্যে ৬৬ জন পাকিস্তানি নাগরিক। যাত্রাপথে দুর্ঘটনায় পড়ে নৌকাটি। এ ঘটনায় ৩৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে, দুর্ঘটনার পর তাঁরা সীমান্তে ১৩ দিন আটকা ছিলেন বলে দাবি করেছেন ওয়াকিং বর্ডারসের সিইও হেলেনা ম্যালেনো। পরে মরোক্কোর প্রশাসন তাঁদের উদ্ধার করে।

এই ঘটনার পর পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানায়, মরোক্কোয় অবস্থিত পাকিস্তানি দূতাবাস স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করছে। উদ্ধার হওয়া পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য মরোক্কোর ঢাকলায় একটি ক্যাম্পে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, রাবাতে অবস্থিত পাকিস্তানি দূতাবাস থেকে একটি বিশেষ দল দুর্ঘটনাকবলিত অভিবাসীদের সহায়তায় পাঠানো হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন এবং মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, “মানবপাচারকারীরা নিরীহ নাগরিকদের বিপজ্জনক পথে প্রলুব্ধ করছে। এই অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

শেহবাজ শরিফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মরোক্কোর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে নিখোঁজদের সন্ধান এবং প্রাণ হারানোদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে। পাশাপাশি, এই দুর্ঘটনার পেছনে থাকা মানবপাচারকারীদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

মরোক্কোর ঢাকলায় আপাতত একটি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের। প্রশাসনিক পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, “আমরা মানবপাচারের মতো অপরাধ বন্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেব। এ ধরনের দুর্ঘটনা আর যেন না ঘটে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এই মর্মান্তিক ঘটনায় বিশ্বজুড়ে মানবপাচারের মতো অপরাধ এবং তার ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।