নিজস্ব সংবাদদাতা: সংসদের শীতকালীন অধিবেশন আজ শেষ হবে। চার সপ্তাহের তীব্র নাটকীয়তা পর্ব শেষ হচ্ছে আজই। এবারের শীতকালীন অধিবেশন সাক্ষী থেকেছে বহু নজিরবিহীন ঘটনার। সর্বপরী বৃহস্পতিবার যে ভাবে আম্বেদকরের জন্যে বিজেপি এবং বিরোধী সাংসদরা হাতাহাতি করলেন, তা কার্যত সংসদের ইতিহাসে এক মনে রাখার মত অধ্যায়। এছাড়াও আরও অনেক বিষয়ের সাক্ষী থেকেছে এবারের শীতকালীন অধিবেশন। দেখে নিন সেই রকমই শীতকালীন অধিবেশনের ১০ সেরা ‘রঙ্গ’।
১ কেন্দ্রীয় সরকার 'এক দেশ, এক নির্বাচন' বিলটিকে ২৭ জন লোকসভার সাংসদ এবং ১২ জন রাজ্যসভার সাংসদের সমন্বয়ে তৈরি যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করার জন্য আজকে আবেদন করবে।
২ গত কয়েক সপ্তাহে ঘন ঘন বাধা এবং বিক্ষোভ দেখা গেছে সংসদে। সংসদের মকর দ্বারে বিক্ষোভের সময় বিজেপি তার দুই সাংসদ আহত হওয়ার পরে বিরোধী দল নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
৩ পাল্টা কংগ্রেসও বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। বিজেপি সাংসদ ধাক্কা দেওয়ার পরে দলের প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে আহত হয়েছেন, সেই পরিপ্রক্ষিতেই কংগ্রেস অভিযোগ জানিয়েছে। একই সাথে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ “সম্মানের ব্যাজ” বলে অভিহিত করেছেন তারা।
৪ বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারেঙ্গি এবং মুকেশ রাজপুত – যারা বিরোধীদের দাবিতে প্রতিবাদ করতে এসেছে আক্রান্ত হলেন এই শীতকালীন অধিবেশনেই। শুধু আক্রান্তই না, হাসপাতালে পৌঁছে যেতে হল সাংসদদের।
৫ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের একটি মন্তব্য কে কেন্দ্র করেই উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের উভয় কক্ষ। যেখানে তিনি বিআর আম্বেদকরের নাম নেওয়া কে "ফ্যাশন"-এর সাথে তুলনা করেছিলেন। তাঁর কথায়, “আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর বলা একটি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি তারা এতবার ঈশ্বরের নাম নিত, তাহলে তারা স্বর্গে স্থান পেত”। শাহর এই মন্তব্যের পরই উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
৬ যদিও অমিত শাহ বিরোধীদের বিরুদ্ধে তথ্য বিকৃত করার এবং ভিডিও এডিট করার অভিযোগ তুলেছেন। কংগ্রেস এবং তৃণমূল তার বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ পেশ করেছে এবং তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে।
৭ শাহ অবশ্য পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন এতে কংগ্রেসের সমস্যার সমাধান হবে না। তাকে ভরা কক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
৮ কংগ্রেসও বিজেপিকে ‘আম্বেদকর’ ইস্যু থেকে মনোযোগ সরানোর জন্য হিংসার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযুক্ত করেছে।
৯ বৃহস্পতিবারের বিশৃঙ্খলার পরে, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা সংসদ ভবনের যে কোনও গেটে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে কঠোর নির্দেশ জারি করেছেন। ওই সব গেটে কোনো বাধা না দেওয়ার জন্য সংসদ সদস্যদের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
১০ শীতকালীন অধিবেশনে কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা গেছে তাঁদের মিত্র দল তৃণমূল এবং সমাজবাদী পার্টিকে। যখন উভয় কক্ষেই কংগ্রেস আদানি ইস্যুতে এবং জর্জ সোরোস ইস্যুতে প্রতিবাদ জানিয়েছে, তখন তৃণমূল বা সমাজবাদী পার্টির সাংসদরা সমর্থন জানাননি। যাতে ইন্ডিয়া জোটে ভাঙনের ছবিই স্পষ্ট হয়েছে।