নিজস্ব সংবাদদাতা: সোমবার ভোরে দিল্লি এবং এর আশেপাশের জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে (এনসিআর) শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের (এনসিসি) তথ্য অনুযায়ী, ভোর ৫টা ৩৬ মিনিট নাগাদ রাজধানী দিল্লিতে মাত্র ৫ কিলোমিটার গভীরে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দিল্লি, তবে এর কম্পন আশেপাশের শহর নয়ডা ও গাজিয়াবাদেও অনুভূত হয়। যদিও ভূমিকম্পের মাত্রা খুব বেশি ছিল না, তবুও অনেকে এটিকে "তীব্র" ও "হিংসাত্মক" বলে বর্ণনা করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই জানান, কম্পনের তীব্রতায় তারা ঘুম থেকে জেগে ওঠেন এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মুহুর্তে।
দিল্লি এবং আশেপাশের অঞ্চলে ভূমিকম্প নতুন কিছু নয়। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল IV-ক্যাটাগরিতে অবস্থিত, যা "মোটামুটি উচ্চ ভূমিকম্পপ্রবণতা" নির্দেশ করে। এর কারণ হল দিল্লি-হরিদ্বার রিজ এবং দিল্লি-মোরাদাবাদ ফল্ট লাইনের মতো প্রধান ভূতাত্ত্বিক কাঠামো, যা ভূমিকম্পের জন্য দায়ী।
/anm-bengali/media/media_files/2024/12/04/dNICrbjzfkRE8EvJSOZe.jpg)
গত মাসেও দিল্লি-এনসিআর-এ কম্পন অনুভব হয়েছিল, যার উৎপত্তিস্থল ছিল নেপালের কাঠমান্ডুতে, যেখানে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লিতে সাধারণত ৫-৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে থাকে। তবে ৭-৮ মাত্রার ভূমিকম্প মাঝেমধ্যে ঘটতে পারে। ১৭২০ সাল থেকে দিল্লি বা আশেপাশের অঞ্চলে মাত্র পাঁচটি বড় ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে, যার মাত্রা ছিল ৫.৫ থেকে ৬.৭ এর মধ্যে।
জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দিল্লির চারপাশে আরও বেশ কয়েকটি ভূকম্পনপ্রবণ অঞ্চল এবং ফল্ট লাইন রয়েছে, যেমন:
মহেন্দ্রগড়-দেরাদুন সাবসারফেস ফল্ট
মোরাদাবাদ ফল্ট
সোহনা ফল্ট
গ্রেট বাউন্ডারি ফল্ট
দিল্লি-সারগোধা রিজ
যমুনা নদীর লাইনমেন্ট
গঙ্গা নদীর লাইনমেন্ট
হিমালয়ের নিকটবর্তী হওয়ায় কম্পনের আশঙ্কা
/anm-bengali/media/media_files/2024/11/04/Fhegylkt5OHx0P276tM9.webp)
ভূমিকম্পের দিক থেকে অত্যন্ত সক্রিয় হিমালয় পর্বতমালার কাছাকাছি হওয়ার কারণে দিল্লি সবসময় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের শ্রেণিবিন্যাস একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা নতুন তথ্যের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে আরও বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সেক্ষেত্রে সর্বদা সতর্ক থাকতেই হবে দিল্লিবাসীকে।