নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ভারী বৃষ্টিতে (Heavy Rainfall) নাজেহাল অবস্থা হয়ে গিয়েছে পাহাড়ি রাজ্য হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh)। এদিকে এহেন বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১৯ আগস্ট পর্যন্ত পাঠদান বন্ধ থাকবে। টানা বৃষ্টির কারণে ২০ জুলাই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি বন্ধ থাকবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
হিমাচল প্রদেশে আবারও মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভূমিধস এবং গাছ পড়ে যাওয়ার কারণে রাজ্যজুড়ে প্রায় ৪৫২ টি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হামিরপুরের বিয়াস নদী তার রুদ্র মূর্তি ধারণ করেছে একপ্রকার। ইতিমধ্যে জনগণকে নদী ও এর সাথে সম্পর্কিত ড্রেনের কাছাকাছি না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সিমলার উপরের এলাকায় খাদ্য সরবরাহও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
ঘরবাড়ি ও যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, মান্ডির সর্বোচ্চ ২৩৬টি, সিমলার ৫৯টি এবং বিলাসপুর জেলার ৪০টি সহ মোট ৪৫২টি রাস্তা এখন যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ রয়েছে।
শিমলা-মাতাউর সড়কে ভূমিধসে বিলাসপুর শহরের নামহোল এলাকার দাগসেচের কাছে তিনটি বাড়ি, একটি গোশালা ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই এলাকায় ভূমিধসের পর প্রশাসন নয়টি বাড়ি খালি করে দিয়েছে। সিমলা ও চণ্ডীগড়ের সংযোগকারী শিমলা-কালকা জাতীয় মহাসড়কে ভূমিধসের কারণে কোটির কাছে চাক্কি মোড়ে রাস্তার দু'পাশে বিপুল সংখ্যক ভারী যানবাহন আটকে পড়েছে। এ ছাড়া মান্ডি জেলার অনেক জায়গা থেকে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমির ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে।
গত ৭২ ঘন্টা ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে হামিরপুর জেলার সমস্ত অংশে আবারও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিয়াস এবং তার উপনদীগুলি আবার উপচে পড়ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে বাইরে বের না হওয়ার এবং বিয়াস নদীর তীর ও ড্রেনের কাছাকাছি যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, গতকাল রাতে গোটা হিমাচল প্রদেশে তাণ্ডব হয়েছে। বিধানসভা নূরপুরের কথা বলতে গেলে, পুরো নূরপুরে বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র নূরপুরেই ৫৯টি বাড়ি এবং বেশ কয়েকটি গোশালা ধসে পড়েছে, যার ফলে আনুমানিক ২৯.২১ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, গত ২৪ জুন হিমাচল প্রদেশে বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ৬,৮০৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে হিমাচল প্রদেশে। বৃষ্টিজনিত ঘটনা ও সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রাজ্যে ভারী বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।