ফিরল লকডাউনের স্মৃতি, বাড়ছে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ, সব বন্ধ

নিপা ভাইরাসের কবলে বহু মানুষ। ভয়ে কাঁপছেন কেরালার মানুষ।

author-image
SWETA MITRA
New Update
nipah vira.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ কোভিডের পর এবার সকলের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নিপা ভাইরাস (Nipah Virus)। এই ভাইরাসকে ঘিরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই নিপা ভাইরাসের কবলে পড়েছে কেরালা। সেখানে একপ্রকার মিনি লকডাউনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেরালার কোঝিকোড়ের নিপা কনটেইনমেন্ট জোনে এখন বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। কুটিয়াদি জুমা মসজিদ মহল্লা কমিটির সেক্রেটারি জুবায়ের পি বলেন, 'আমাদের এলাকায় নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে জেলা কালেক্টর এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষ আমাদের মসজিদে লোক জড়ো না করার নির্দেশ দিয়েছে। আদেশ মেনে আমরা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মসজিদটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মসজিদে আজ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে না। আমরা এই রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করবো।

কেরালার কোঝিকোডে নিপা ভাইরাসের লাগাতার খবর পাওয়ার পর পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। এখনও পর্যন্ত এখানে নিপা ভাইরাসের পাঁচটি ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি এক স্বাস্থ্যকর্মীর রিপোর্টও পজিটিভ এসেছে। তবে বছর বয়সী শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোঝিকোডে এখনও পর্যন্ত দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে আক্রান্ত হয়েছেন তিনজন। সম্প্রতি ২৪ বছর বয়সী এক স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫ জন।

 

কেরালা সরকার জানিয়েছে, কোঝিকোড় জেলায় নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই, তবে মানুষকে তাদের দৈনন্দিন কাজে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বিধানসভায় বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে সতর্কতার সঙ্গে এই সমস্যা মোকাবেলা করতে পারি। সরকার আইসিএমআরকে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি সরবরাহ করতে বলেছে। এটি নিপা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য একমাত্র উপলব্ধ অ্যান্টি-ভাইরাল চিকিত্সা, যদিও এটি এখনও ক্লিনিকালভাবে প্রমাণিত হয়নি।‘

 

 

কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ ১১ সেপ্টেম্বর রাত থেকে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেছেন। কেরালার কোঝিকোড়ের সাতটি পঞ্চায়েতের স্কুল ব্যাঙ্ক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে কেরালায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এটি শূকর এবং বাদুড় বা তাদের তরল জাতীয় প্রাণী দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরে এই রোগের প্রাদুর্ভাবের সময় ভাইরাসটি প্রথম সনাক্ত করা হয়েছিল।

যদি কোনও ব্যক্তি নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তবে তার মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা, অ্যাটিপিকাল নিউমোনিয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেবে। একই সময়ে, যদি পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয় তবে কোনও ব্যক্তি এনসেফালাইটিসের শিকারও হতে পারে এবং ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কোমায় যেতে পারে।