নিজস্ব প্রতিবেদন : চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে, বয়সজনিত রুটিন চেক-আপের জন্য মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে ভর্তি হন বর্ষীয়ান শিল্পপতি রতন টাটা। ৮৬ বছর বয়সী এই কোটিপতি, যিনি টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, গত ৯ অক্টোবর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি নিজেই একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর শরীর ভাল আছে, যা মৃত্যুর পর গোটা দেশকে শোকস্তব্ধ করেছে।
রতন টাটা ১৯৯১ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা গ্রুপের দায়িত্ব সামলেছেন। তাঁর নেতৃত্বে, টাটা গ্রুপ দেশের সেরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে। তিনি যে সময়ে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন সংস্থাটি শতাধিক লিস্টেড এবং আনলিস্টেড কোম্পানির অধীনে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের মোট ব্যবসার পরিমাণে পৌঁছায়।
রতন টাটার সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩৮০০ কোটি টাকা বলে জানা যায়। তবে, তাঁর আয়ের একটি বড় অংশ দান-সহায়ক কাজে ব্যয়িত হয়েছে। রতন টাটা তাঁর জীবনে ঔদার্য ও জনহিতৈষিতার জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি টাটা ট্রাস্টে নিজের আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ দান করতেন, যা টাটা গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানির দ্বারা উপার্জিত মোট উপার্জনের ৬৬ শতাংশ অবদান রাখে।
সমাজসেবার ক্ষেত্রেও তিনি সবসময় এগিয়ে ছিলেন। ২০০৪ সালের সুনামি বা করোনা অতিমারীর মতো নানা সঙ্কটে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ প্রদান করে তাঁদের পড়াশোনায় সহায়তা করেছেন, বিশেষ করে যারা অর্থনৈতিক কারণে পড়াশোনা করতে পারছিল না। তাঁর সংস্থা, জেএন টাটা এনডাউমেন্ট, স্যার রতন টাটা স্কলারশিপ এবং টাটা স্কলারশিপের মাধ্যমে দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করেছে।
রতন টাটার মৃত্যু শুধু তাঁর ব্যবসায়িক সফলতা নয়, বরং মানবতার প্রতি তাঁর অবদানকেও স্মরণ করে। তিনি একজন প্রভাবশালী উদ্যোক্তা ছিলেন, যার দর্শন ও কাজ দেশের উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণে এক অবিস্মরণীয় ছাপ রেখে যাবে।