নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আপনি কি কখনও এমন এক জায়গার কথা শুনেছেন যেখানে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে এসে যে কোনও মানুষ একসাথে বসবাস করে। যেখানে দেখা যায় ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির অদ্ভুত মেলবন্ধন। ভারতে আছে এমনই এক গোপন শহর, যেখানে বর্তমানে জাতীয়তা, রাজনীতি, বর্ণ এবং ধর্ম নির্বিশেষে ৬০ টি দেশ থেকে আসা ৩২৮৮ জন বাসিন্দা একসাথে থাকে। এই শহরটি 'বিশেষ করে কারোরই নয় এবং সামগ্রিকভাবে মানবতার' এমনই ধারণা এখানে মানুষদের। এই প্রকল্পটি ইউনেস্কো দ্বারা অনুমোদিত এবং ভারত সরকার দ্বারা সমর্থিত।
পন্ডিচেরির উত্তরে এই পরীক্ষামূলক জনপদটি ছিল শ্রী অরবিন্দ ঘোষের একটি দর্শন এবং এটি ১৯৬৮ সালে মিরা আলফাসা নামক এক ফরাসি মহিলা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যাকে অরোভিলিয়ানরা 'দ্য মাদার' বলে উল্লেখ করেছেন, মানব বিবর্তনের প্রক্রিয়া নিয়ে পরীক্ষা করার জন্য। অরোভিলিয়ানদের মূলমন্ত্র হল প্রাকৃতিক সম্পদ হ্রাস এড়িয়ে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে জীবনযাপনের উন্নতি করা। এই শহরে টাকার প্রচলন নেই অর্থাৎ এখানে জীবন-যাপন সম্পূর্ণভাবে নগদবিহীন।
গত কয়েক বছরে, এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটনের জায়গাও হয়ে উঠেছে। আপনি যদি একটি শান্তিপূর্ণ অবকাশ খুঁজছেন, এবং বিকল্প লাইফস্টাইলগুলি আপনাকে আকৃষ্ট করে, আপনি অরোভিলে কয়েক দিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন। যেহেতু এই জায়গাটি পন্ডিচেরির অন্তর্গত, আপনি ভারতের যে কোনও বড় শহর থেকেই এখানে পৌঁছাতে পারেন। এর নিকটতম বিমানবন্দর হল চেন্নাই যেখান থেকে এটি ৩ ঘন্টার যাত্রাপথ। অরোভিল একটি বড় শহর তাই এটি পুরোটা ঘুরে দেখার জন্য একটি বৈদ্যুতিক সাইকেল বা একটি মোটরবাইক ভাড়া করা আবশ্যক ৷
এখানকার প্রধান আকর্ষণ হল 'মাতৃমন্দির', এই বিশাল কাঠামোটি অরোভিলের মাঝখানে অবস্থিত এবং এর ভিতরে মার্বেলের একটি ধ্যানকক্ষ রয়েছে,আপনি এখানে আসার আগেই ভিতরে প্রবেশ করার অগ্রিম বুকিং করে রাখতে পারেন এবং অনুভব করতে পারেন এখানকার আধ্যাত্মিক পরিবেশ। এখানে আপনি অরোভিলিয়ানদের সাথে একটি দিন কাটাতে পারেন এবং তাদের জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারেন। কাছাকাছি আছে 'অরো বিচ' এবং এখানের লোকেদের তৈরি করা কিছু ক্যাফে এবং দোকান । আরও সুন্দর অভিজ্ঞতার জন্য, আপনি অরোভিলের ভিতরে থাকা যে কোনও গেস্টহাউসে রাত কাটাতে পারেন।