বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের আওতায় আনার প্রয়োজন নেই, দাবি কেন্দ্রের

ভারত সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানায়, বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের আওতায় আনার প্রয়োজন নেই। সরকার মনে করে, এটি একটি সামাজিক সমস্যা এবং ইতিমধ্যে শাস্তির ব্যবস্থা বিদ্যমান। এই সিদ্ধান্ত নারী অধিকার আন্দোলনকে নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

author-image
Debapriya Sarkar
আপডেট করা হয়েছে
New Update
supremeecourt.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে নারীদের প্রতি নির্যাতনের ঘটনা প্রতিদিন সংবাদে উঠে আসছে, যা সামাজিক প্রতিবাদকে উসকে দিচ্ছে। কিন্তু বৈবাহিক ধর্ষণের মতো গুরুতর বিষয়টি এখনও উপেক্ষিত। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে, জানিয়ে দিয়েছে যে তারা বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার বিরোধিতা করছে।

publive-image

কেন্দ্রীয় সরকারের হলফনামায় বলা হয়েছে, বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রয়োজন নেই। তাদের যুক্তি হলো, এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা বিদ্যমান। সরকারের মতে, বৈবাহিক ধর্ষণ একটি আইনি সমস্যার চেয়ে বেশি সামাজিক সমস্যা, যা সমাজের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। ফলে বিষয়টি নিয়ে সঠিক পর্যালোচনা না করে এবং সবপক্ষের মতামত গ্রহণ না করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো উচিত নয়।

ভারতে বিবাহ একটি প্রতিষ্ঠানের মতো, যেখানে স্বামী-স্ত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক বাধ্যবাধকতা থাকে। সাতপাকে ঘুরে যে অঙ্গীকার করা হয়, তা লঙ্ঘন করার প্রশ্নে সরকার বলে, বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে মহিলাদের সম্মতি বিধিবদ্ধভাবে সংরক্ষিত, কিন্তু শাস্তিমূলক বিধানের আওতায় আনা ভিন্ন বিষয়। বর্তমানে, দিল্লি হাইকোর্টের একটি দ্বিধাবিভক্ত রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে শুনানি চলছে। ওই রায়ে বিচারপতিরা স্ত্রী ধর্ষণের অভিযোগে স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। এই মামলার ফলাফল নারী অধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

publive-image

সরকারের এই অবস্থান নারীদের অধিকারের আন্দোলনকে নতুনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন যে, এটি নারীদের সুরক্ষা এবং স্বাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। নাগরিক সমাজ এবং নারী অধিকার সংগঠনগুলি সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে এবং তাদের দাবি, বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই বিতর্কটি শুধু আইনি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি সমাজের মূল্যবোধ এবং নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনকেও নির্দেশ করে।