নিজস্ব সংবাদদদাতা: সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে আরও একধাপ বেড়ে গেল চিন্তা। আরও একটি হিমবাহে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে সতর্কতা জারি করে দিয়েছে সিকিম সরকার। এর পাশাপাশি এবার উদ্ধারকাজে গতি বাড়তেই লাফিয়ে বেড়ে যাচ্ছে সিকিমে মৃতের সংখ্যা। সিকিমে হড়পা বানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে পৌঁছল অন্তত ৪০-এ। এর মধ্যে ২২টি দেহ তিস্তা নদী থেকে পাওয়া গেছে। জলপাইগুড়ি থেকেও একাধিক দেহ উদ্ধার করা হয়েছে এর সঙ্গে।
প্রশাসনের তরফে এদিন সতর্কতা জারি করে জানানো হয় যে আরও একটি হিমবাহে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। ফলে তখন চরম বিপদের মুখে পড়েছে লাচেনের কাছে অবস্থিত সাকো চো লেক। যে কোনও মুহূর্তে এই হ্রদে ফাটল ধরতে পারে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে লাচেন ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদেরও আপাতত সিকিমে যেতে বারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ও বুধবারের হড়পা বানে উত্তর সিকিমের সিংথামের কাছে একটি সেনা ছাউনি ভেসে গিয়েছে। নিখোঁজ হন তখন ২৩ জন জওয়ান। এরপরই প্রশাসন পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়ে দেয়। জানানো হয়েছে যে তিস্তার জলের সঙ্গে অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক ভেসে যেতে পারে। নদীর পাড়ে এমন কিছু দেখতে পেলে, তা কেউ স্পর্শ যাতে না করেন সেই নিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়। কারণ তার ফলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। মঙ্গলবার রাতে উত্তর সিকিমে একটি হিমবাহে বিস্ফোরণ হওয়ার পর সেই হিমবাহের জল এসে আছড়ে পড়ে লোনক হ্রদে। সেই হ্রদের প্রাচীরে ফাটল ধরায় হড়পা বান চলে আসে। চুংথাম বাঁধে ফাটল ধরে ও সেখান থেকে জল ছাড়ার জন্য তিস্তা নদীর জলস্তর বেড়ে যেতে থাকে। এর ফলে তৎক্ষণাৎ ভেসে যায় উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ অংশ। হড়পা বানে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। সরকারের ওই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে দ্রুত হাইড্রোপাওয়ার প্ল্যান্টগুলি চালু করার চেষ্টা জারি রয়েছে। শক্তি মন্ত্রকের তরফেও জানানো হয়েছে যে শীঘ্রই হাইড্রোপাওয়ার প্রকল্প কেন্দ্রের পরিদর্শন করতে যাবেন তারা। গতকালই উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়িতে তিস্তার জলে ভেসে আসা মর্টার বাড়িতে এক ব্যক্তি নিয়ে এলে তার বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার সঙ্গে আবার গুরুতর আহত হন পরিবারের আরও ৫ জন সদস্য।