নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আবারও ভয়াবহ বন্যার কবলে আসাম (Assam)। ফুঁসছে ব্রহ্মপুত্র নদী। আজ ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় আসামের বেশ কয়েকটি অংশে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জলের তলায় চলে গিয়েছে শোণিতপুর।
কেন্দ্রীয় জল কমিশনের (সিডব্লিউসি) রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্রের জল জোরহাট জেলার নিয়ামতিঘাটে এবং দিসাং নদীর জল শিবসাগর জেলার নাংলামুরাঘাটে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তেজপুর, গোয়ালপাড়া এবং ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্রের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা বজায় রয়েছে। উত্তর আসামের বেকি, গৌরাং ও সোনকোশ নদী এবং জিয়া-ভারালি নদীর জল হু হু করে বেড়েই চলেছে। বাড়ি, ঘর, স্কুল, অফিসে হু হু করে বন্যার জল ঢুকছে। চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ।
এএসডিএমএ-র তথ্য অনুযায়ী, ধেমাজি, কোকরাঝাড়, লখিমপুর ও চিরাং জেলার ১০৩টি গ্রাম বন্যার কবলে পড়েছে।
দারাং জেলার সিপাঝারে সাকতলা বাঁধ সহ অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। আসামের বিশ্বনাথ ও ধেমাজি জেলার কিছু অংশে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে এবং ৯,৮১২ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী প্রায় ২৬১ জন মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অন্যদিকে ধেমাজি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৯,৫৫১ জন মানুষ ক্রমাগত বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ধেমাজি, লখিমপুর ও জোরহাট জেলায় অবকাঠামো ও বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, গুয়াহাটির আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র (আরএমসি) আসামের প্রায় সমস্ত অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে, যার মধ্যে রাজ্যের আরও কয়েকটি জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিহয়েছে গোসাইগাঁও ও ফকিরাগ্রামে।
এক সরকারী বুলেটিনে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৬৬ দশমিক ৪৭ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) আগামী কয়েক দিন এই অঞ্চলে অত্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। আগামী কয়েকদিনের জন্য আসামের কিছু এলাকায় হলুদ ও কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে আসাম অঞ্চলের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগেই আসামে বন্যার কারণে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল।