নিজস্ব সংবাদদাতা: ফরিদাবাদের শতরূপা চৌধুরী নামের এক বাসিন্দা সাইবার প্রতারণার শিকার হয়ে সাত দিনে এক কোটির ওপর টাকা হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। অভিযুক্তরা নিজেদের হায়দরাবাদের পুলিশ ও ইডির আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে ওই মহিলার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রতারকরা তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অত্যাচার করেন ও ডিজিট্যালি অ্যারেস্ট করে রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এএনএম নিউজের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শতরূপা চৌধুরী জানান, ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁকে এক ব্যক্তি ফোন করেন। তিনি নিজেকে পুলিশ অফিসার বলে পরিচয় দেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তি জানান শতরূপা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সেই বিষয়ে তিনি তদন্ত করছেন। শতরূপা চৌধুরী প্রথম থেকেই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। তিনি জানান, মাদক পাচারের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। এরপরেই অভিযুক্ত তাঁর কাছ থেকে একটি ভিডিও রেকর্ডিং দাবি করেন। সেই রেকর্ডিংয়ে শতরূপা চৌধুরীকে তাঁর নির্দোষের কথা বলতে বলা হয়। প্রায় প্রতিদিন তাঁকে ফোন করা হতো। নানা ভাবে তাঁর ওপর মানসিক অত্যাচার করা হতো। শুধু মাদক পাচার তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে যোগ থাকারও অভিযোগ রয়েছে বলে ফোনে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়।
জানা যায়, প্রতারকরা হোয়াটস অ্যাপের ভিডিও কলে তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন। শুধু তাই নয়, ভিডিও কলে তাঁর সামনে পুলিশের পোশাক পরে থাকতেন প্রতারকরা। ডিজিট্যালি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। প্রতারকদের কথা অমান্য করলে ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনায় তাঁকে ২৪x৭ ভিডিও কলে থাকতে হতো। তাঁকে ১৫ লক্ষ টাকা স্থানান্তরিত করার জন্যও চাপ দেওয়া হয়ে থাকে। একবার টাকা স্থানান্তরিত করার পর পুণরায় তাঁকে টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। অক্টোবরের এক থেকে চার তারিখের মধ্যে তিনি ১.০৩ কোটি টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করতে বাধ্য হয়েছিলেন। শুধু তাঁর কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ৩০,০০০ টাকা ছিল।
শতরূপা চৌধুরী এএনএম নিউজের মুখোমুখি হয়ে জানান, তাঁর ব্যক্তিগত একাধিক কথা, তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কথা জানতো প্রতারকরা। তাই প্রতারকদের হুমকিতে তিনি ভয় পেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি তাঁদের কথা শুনতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এই অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছিলেন না। ৭ অক্টোবর তিনি প্রথমবার প্রতিবেশীদের কাছে সাহায্যের জন্য যান। ওই দিনই তিনি প্রতিবেশীদের সাহায্যে সাইবার সেলে নিজের অভিযোগ দায়ের করেন। ২৫ অক্টোবরের মধ্যে তিনি ২০ লক্ষ টাকা ফেরত পান। বাকি টাকা উদ্ধারের জন্য সাইবার ক্রাইম ডিপার্টমেন্ট তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।