মধ্যপ্রদেশে হাতির দাপট: কর্ণাটক পারল না, ডাক পড়ল বাংলার

কর্ণাটক ফেল! হাতি তাড়াতে মধ্যপ্রদেশে খড়্গপুরের হুলা টিম।

author-image
Aniket
New Update
c

নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলায় ডাক পড়ে বাপি, আকাশ, মথুরদের। কখনও লোকালয়ে প্রবেশ করলে বা দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকায় দাপাদাপি শুরু করলে হাতির পালকে অন্যত্র সরাতে তারা হাজির হয়। দিন বা রাত জঙ্গলের বুক চিরে হুলা হাতে এগিয়ে যায় মাইলের পর মাইল পথ। সময়ে পায় না পানীয় জল থেকে খাদ্য, এমনকি মজুরিও। তবুও একদল যুবক টিম গঠন করে এলাকায় হাতির তাণ্ডব রুখতে। রাতদিন পরিশ্রম করে মেলে কিছু মজুরিও। সেই যুবকরা এবার বাংলা ছেড়ে পাড়ি দিল মধ্যপ্রদেশে। কাজ লোকালয় থেকে হাতিকে অন্যত্র সরানো। খড়্গপুর বনবিভাগের কলাইকুন্ডা এলাকায় রয়েছে একাধিক হুলা টিম। কারণ সারা বছর ওই এলাকায় হাতির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। কলাইকুন্ডা ছাড়াও কেশিয়াড়ি, মেদিনীপুর, চাঁদড়া, ঝাড়গ্রাম, হাওড়াতেও ওই এলাকার হুলা টিমের ডাক পড়েছিল লোকালয় থেকে হাতি সরাতে। এতদিন রাজ্যের মধ্যেই তারা কাজ করে গিয়েছে। এবার ভিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশে ডাক পড়লো হাতি সরানোর। জানা গিয়েছে, ছত্তিশগড় থেকে মধ্যপ্রদেশের অনুপপুর বন বিভাগের জেইথারি রেঞ্জ এলাকায় প্রবেশ করে দুটি হাতি। তাদের হানায় মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি একাধিক বাড়ি ভাঙার ঘটনাও ঘটেছে। সন্ধ্যা হলেই খাবারের খোঁজে হানা দিচ্ছে বাড়িতে। আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। হাতি দুটি সরাতে কর্ণাটক থেকে হুলা টিম আনা হয়েছিল। তারা কার্যত ব্যর্থ হয়েই ফিরে যায়। তারপরই অনুপপুর বন বিভাগ থেকে যোগাযোগ করা হয় খড়্গপুর বনবিভাগের কলাইকুন্ডার হুলা টিমের সঙ্গে। সেখান থেকে বাপি মাহাত, আকাশ মাহাত, মথুর মাহাত সহ ১৪ জনের একটি টিম পৌঁছে গিয়েছে মধ্যপ্রদেশের ওই এলাকায়। তাদের যাতায়াতের জন্য ট্রেনে রিজার্ভেশন করা হয়। এমনকি মধ্যপ্রদেশ থেকে এক বনকর্মী এসে তাদের নিয়ে গিয়েছেন। অনুপপুর বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুটি হাতি প্রায় কুড়ি দিন ধরে ওই এলাকার জঙ্গলে ডেরা বেঁধেছে। সন্ধ্যা হলেই ভেঙে ফেলছে একের পর এক বাড়ি।  কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু থেকে হুলা টিম আনা হয়েছিল। কিন্তু হাতিকে সরানো যায়নি। এবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে হুলা টিমের ডাক পড়েছে। রবিবার সেখানে পৌঁছে গিয়েছে কলাইকুন্ডার হুলা টিম। ওই হুলা টিমের সদস্য বাপি মাহাত বলেন, "মধ্যপ্রদেশের অনুপপুর বনবিভাগ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রথমে তারা বলেছিল গাড়িতে করে ওখানে যেতে। কিন্তু কোনো গাড়ি না যেতে চাওয়ায় ওখানকার বনদপ্তর থেকে কর্মী এসে ট্রেনে রিজার্ভেশন করে আমাদেরকে নিয়ে যায়। ওই এলাকায় দুটি হাতি একাধিক বাড়ি ভেঙেছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে কর্ণাটকের হুলা টিম এসেছিল, তারা ফিরে গিয়েছে। একটি জঙ্গলের মধ্যে ওই দুটি হাতি রয়েছে। যার চারিদিকে বিস্তীর্ণ এলাকা ফাঁকা। পুরোটাই জঙ্গল থাকলে খুব সহজে হাতিগুলিকে সরানো যেত। আমরা প্রথম দিন এসে এলাকা দেখলাম। সোমবার জঙ্গল ছেড়ে হাতিগুলি লোকালয়ে নামলে সরানোর চেষ্টা করা হবে। হাতিগুলিকে পুনরায় ছত্তিশগড়ে ফেরত পাঠানোর জন্য বনদপ্তর থেকেও আমাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে।"

Adddd