বিপজ্জনক ! সাবধান করা হয়েছিল আগেই ? তাও কেন এই গাফিলতি ?

উত্তর সিকিমের লোনক হ্রদে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয়। তিস্তার করালগ্রাসে চরম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সিকিমে। কমপক্ষে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এখনও নিখোঁজ ১০২ জন।

author-image
Adrita
New Update
f

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে লোনক হ্রদ। এমন সতর্কবার্তা আগে থেকেই দেওয়া হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট এর তরফ থেকে। তারা উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে পুরো সিকিমে ৩২০টি হিমবাহ হ্রদের সন্ধান পেয়েছিল। যেগুলির মধ্যে ১৪টিকে বিপজ্জনক বলে জানিয়েওছিল তারা। সেই বিপজ্জনক হ্রদের তালিকায় ছিল দক্ষিণ লোনক হ্রদেরও নাম। তবুও কেন কোনও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ? কেন হল গাঁফিলতি ? কার গাফিলতির জন্য ধ্বংস হয়ে গেল সব ? উঠছে হাজার প্রশ্ন। নেই কোনও উত্তর ! 

লোনক হ্রদ লোনক হিমবাহ সৃষ্ট। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭ হাজার ১০০ ফুট উপরে লোনক হিমবাহটি রয়েছে। ২৬০ ফুট গভীর, প্রায় ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং আধ কিলোমিটার চওড়া এই হিমবাহটি। মঙ্গলবার লোনক হ্রদ ফেটে সিকিমে যে দুর্যোগ নেমে এসেছে, তার নেপথ্যে ‘গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড’ (জিএলওএফ) রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ হিমবাহ গলতে থাকায় হ্রদে বিপজ্জনক ভাবে জলের পরিমাণ বাড়তে থাকে। ফলে হ্রদের দেওয়ালে ক্রমশ চাপ বাড়তে থাকে। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে হ্রদ ফেটে যায়। ২০২১ সালে উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে যে দুর্যোগ এসেছিল, তার নেপথ্যেও এই ‘গ্লেসিয়াল আউটবার্স্ট’ ছিল বলে মনে করা হয়।
hiring.jpg
১৬৮ হেক্টর এলাকা জুড়ে বিস্তার এই লোনক হ্রদের। এই হ্রদের আয়তন এবং গভীরতা দ্রুত বাড়ছিল। হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ হলেও এতে জল বেশি ছিল না। কিন্তু গত পাঁচ দশকে এই হ্রদের গভীরতা দ্রুত বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে জলস্তরও। বর্তমানে এই হ্রদের গভীরতা ১০ তলা বাড়ির সমান। দৈর্ঘ্যে আড়াই কিলোমিটার এবং প্রস্থে ৬০০ মিটার। হ্রদের এই দ্রুত পরিবর্তনে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, মেঘভাঙা বৃষ্টি হলে মহাবিপদ নেমে আসবে সিকিমে।
hiring 2.jpeg
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতায় রয়েছে এই হ্রদ। এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল, যে ভাবে উষ্ণায়নের প্রভাব বাড়ছে, তাতে এই হ্রদে জমে থাকা বরফ দ্রুত গলতে শুরু করবে, সেই সঙ্গে জলস্তর বাড়বে। তার সঙ্গে যদি মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়, তা হলে হ্রদ ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। অনেক সময় বরফে বরফে ঘষা লেগেও গলন প্রক্রিয়া দ্রুত হতে থাকে। লোনক হ্রদের ক্ষেত্রেও তেমনটা ঘটেছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।