নিজস্ব সংবাদদাতা : মায়ের মৃত্যু হয়েছে আগেই। তারপর থেকে বাবাই একমাত্র অভিভাবক ছিলেন মেয়ের। কিন্তু দুজনেই বর্তমানে জেল বন্দি। মামলা চলছে। প্রয়োজন অর্থের। কীভাবে চলবে? কথা হচ্ছে গরুপাচার মামলায় তিহারে বন্দি বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও তার কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। সোমবার ছিল সুকন্যার অন্তবর্তী জামিনের মামলার শুনানি। দিল্লি রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বিশেষ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংহর এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। কেষ্ট কন্যার আইনজীবী তার মক্কেলের হয়ে এদিন অন্তর্বর্তী জামিনের সওয়াল করেছেন। সুকন্যাকে ৬ সপ্তাহের অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হোক বলে আদালতের কাছে আবেদন রাখেন। কারণ হিসেবে বলেন,বর্তমানে সুকন্যা দেউলিয়া। অর্থনৈতিক অবস্থা সঙ্কটে। বাবা-মেয়ে দুজনেই জেল বন্দি হওয়ায় বন্ধ রোজগারের পথ। এদিকে সুকন্যার আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধীতা করে ইডি। অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের বক্তব্য, বাবার টাকা বিনিয়োগের বিষয়ে শেষ কথা সুকন্যাই বলতেন। তার আর্থিক সঙ্কট নেই বলে দাবি করে ইডি।
সুকন্যা পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। সেক্ষেত্রে তার বেতনের খোঁজ নেন বিচারক। কেষ্ট কন্যা বেতন পাচ্ছেন কিনা তা জানতে চায় আদালত। সুকন্যার আইনজীবী জানান, ইডি সুকন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অ্যাটাচ করে রেখেছে। ফলে, অর্থনৈতিক সঙ্কট যে রয়েছে সে কথাই বোঝাতে চান আইনজীবী। সওয়াল জবাব শেষে এদিন রায় ঘোষণা করেনি আদালত। বিচারক রায়দান স্থগিত রাখেন। সুকন্যা অন্তর্বর্তী জামিন পাবেন কিনা তা জানতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে রায়দান পর্যন্ত। রায় ঘোষণা করা হবে ১২ জুলাই বুধবার।
অন্তর্বর্তী জামিন না পেলে কীভাবে হবে অর্থ উপার্জন? কীভাবে আইনজীবীদের ফিস মেটাবেন অনুব্রত-সুকন্যা? মামলায় কি কোনো ছেদ পড়বে? নাকি টাকা জোগাড়ের সুযোগ তাকে দেবে আদালত। এই প্রশ্ন গুলো থেকেই যাচ্ছে। দু দিন পরে কী সিদ্ধান্ত নেয় আদালত তার ওপর নির্ভর করছে সুকন্যার ভবিষ্যত। এদিকে বীরভূমে তৃণমূলের প্রার্থীদের হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে সশীরে হাজিরা দিতে না পারলেও মুঠো ফোনে দলীয় কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবারেও তার মুখে শোনা যায় অনুব্রত-সুকন্যার নাম। তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ। প্রমাণ নেই বলেই আটকে রাখা হয়েছে জেলসে। এভাবেই সুর চড়ান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার অনুব্রত-সপকন্যাকে মিথ্যা ভাবে আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছেন। সুকন্যার যে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাতে দল কি পাশে থাকবে? সেই প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে।