নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মণিপুরের হিংসার ছবি, ভিডিও দেখে আঁতকে উঠেছে দেশ। গত ২ মে থেকে শুরু হওয়া মণিপুর হিংসায় সরকারী হিসেবে দেড়শো জন মারা গিয়েছেন, নিখোঁজ বহু। ঘরছাড়া ২০ হাজার মানুষ। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়ার প্রমাণ বিভিন্ন সোশ্য়াল মিডিয়া পোস্টে দেখা যাচ্ছে। কংগ্রেস সহ বিরোধী দলেরা নেতারা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে। গতকাল, শুক্রবার ইস্তফাপত্র লিখেও শেষ অবধি মতবদলে আর পদত্যাগ করেননি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী।
ক'টা দিন চুপ থাকার পর মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং তাদের রাজ্যের হিংসার বিষয়ে মুখ খুললেন। মণিপুর হিংসার পিছনে বড় বহিরাগত শক্তির হাত দেখছেন বীরেন সিং। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্যের মানুষ নয়, বহিরাগত শক্তির মদতেই মণিপুরে এত বড় হিংসা চলছে। তিনি জানান, মণিপুর হিংসায় বহিরাগত শক্তি ও রাজনৈতিক অপশক্তির হাত আছে বলেই বিজেপির অফিসে হামলা হচ্ছে। তিনি জানান, বিজেপি অফিসে হামলা সাধারণ মানুষ করেননি। যারা এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রাজনৈতক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন, তাদের ভগবান ক্ষমা করবেন না বলে কার্যত অভিশাপ দেওয়ার সুরে তিনি অভিযোগ করেন। বীরেন সিং জানান, মানুষের জীবন নিয়ে কারও রাজনীতি করা উচিত নয়। তবে কেন্দ্র ও রাজ্যে দুটোতেই তার দল ক্ষমতায়। হিংসা রুখতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।
রাজ্যে চলা হিংসার দায় প্রাক্তন শাসক দল কংগ্রেসের কাঁধেই চাপালেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। বীরেন সিং বলেন, "এটা আজকের সমস্যা নয়। কংগ্রেসে যে বিষ গাছটা পুঁতে গিয়েছে, সেই বিষাক্ত ফলটাই আমরা খাচ্ছি। গোটা দুনিয়া জানে কার দোষে এটা হচ্ছে। ২০০৫-২০১৮, গত ১৩ বছর ধরে মেইতেই জঙ্গিদের ছেড়ে রাখা হয়েছিল। আমরা সেটা নিয়ন্ত্রণ করেছি। তাই এত বড় ঘটনা ঘটছে। কুকি-মেইতেই সংঘর্ষ দু-তিন বছর ধরে চলছে। তাতে মানুষের মৃত্য়ু হচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে সম্পত্তির।"
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার-সাংবাদিক এন বীরেন সিং।দলবদলে বিজেপিতে এসে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মণিপুর সফরকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং বলেন, " যে কেউ এখানে আসতে পারেন। রাহুল গান্ধীও এসেছিলেন। কিন্তু ঘটনার ৪১ দিন পর কেন তিনি এলেন, আগে আসতে পারতেন। সবটাই আসলে রাজনৈতিক ফয়দা তোলার কৌশল।"