নিজস্ব সংবাদদাতা: মহাকুম্ভে মৌনি অমাবস্যার রাতে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জনের। উত্তরপ্রদেশ সরকার প্রকাশিত তালিকায় বাংলার তিনজন পুণ্যার্থীর নামও রয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁদের মরদেহ রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হলেও পরিবারের হাতে দেওয়া হয়নি কোনও ডেথ সার্টিফিকেট বা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। শুধুমাত্র একটি ছোট চিরকুটে নাম লিখে দেহ হস্তান্তর করেছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন, যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
কলকাতার বাসন্তী পোদ্দার, শালবনির উর্মিলা ভুঁইয়া এবং জামুড়িয়ার বিনোদ রুইদাসের মৃত্যু হয়েছে মহাকুম্ভে। কিন্তু তাঁদের পরিবারের হাতে দেওয়া দেহের সঙ্গে প্রশাসনের তরফে শুধুমাত্র একটি চিরকুট দেওয়া হয়েছে, যেখানে নাম, ঠিকানা এবং দেহ গ্রহণকারীর তথ্য লেখা রয়েছে। এতে মৃত্যুর কারণ বা মহাকুম্ভে ঘটনার উল্লেখ না থাকায় প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে কি মৃতের সংখ্যা গোপন করার চেষ্টা চলছে?
এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, “কীভাবে দ্রুত লাশ লুকিয়ে ফেলা যায়, কীভাবে মৃত্যু ধামাচাপা দেওয়া যায়— সেটাই প্রমাণ করল এই সরকার। মৃতদের পরিবার সহায়তা চাইতে গেলে এক দরজা থেকে অন্য দরজায় ঘুরতে হয়েছে।”
উত্তরপ্রদেশের বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে মৃতের সংখ্যা লুকোচ্ছে, যাতে ক্ষতিপূরণ না দিতে হয়। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বদলে তাদের বিপাকে ফেলা হচ্ছে।”
যদিও এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা। রাজনৈতিক রং চড়ানোর কোনও প্রয়োজন নেই। মৃতদের পরিবারের যদি কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আমরা পাশে দাঁড়াব।”
নিহতদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে কোনও সরকারি ব্যাখ্যা না থাকায় ক্ষতিপূরণ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যেহেতু মৃত্যুর সার্টিফিকেট নেই, তাই মৃতদের পরিবার আদৌ সরকারি সহায়তা পাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
মহাকুম্ভের মতো বিশাল আয়োজনে এমন অব্যবস্থাপনা এবং মৃত্যুর ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকা ও দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।