নিজস্ব সংবাদদাতা: লোকসভা নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে ফের 'ভারত জোড়ো যাত্রা' শুরু করার পরিকল্পনা করছেন রাহুল গান্ধী। জানা গেছে যে গত বছরের মতো এ বছরও সেপ্টেম্বর মাস থেকেই 'ভারত জোড়ো' শুরু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের তখন আর ৬ মাস মতো বাকি থাকবে। সেই সময় দেশ জুড়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে জোরদার প্রভাব বিস্তার করতেই দ্বিতীয় দফার 'ভারত জোড়ো যাত্রা' শুরু করতে চাইছেন রাহুল।
প্রথম 'ভারত জোড়ো যাত্রা' শুরু হয় দক্ষিণ ভারতের কন্যাকুমারী থেকে আর সেটা শেষ হয় উত্তর ভারতের শ্রীনগরে। প্রায় পাঁচ মাস ধরে চার হাজার কিলোমিটার যাত্রা করেন রাহুল মানুষের মাঝে। এ বারের ভারত যাত্রা পূর্ব থেকে পশ্চিম ভারত পর্যন্ত করা হবে। অরুণাচল প্রদেশের লোহিত জেলার পরশুরাম কুণ্ড থেকে শুরু হয়ে গুজরাতের পোরবন্দরে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর জন্মস্থলে যাত্রা শেষ করা হবে। এ বারও মোটামুটি পাঁচ মাস ধরে তিন হাজার কিলোমিটারের বেশি যাত্রা চলবে। এক দিকে বিজেপি-বিরোধী দলগুলিকে একজোট করে 'ইন্ডিয়া' জোট তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে মোদী সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে হাওয়াও তুলতে হবে। রাহুল গান্ধীর প্রথম 'ভারত জোড়ো যাত্রার' মূল বার্তা ছিল, মোদী সরকার তথা বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা। আর মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বের সমস্যা নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা। এবার তার সঙ্গে 'ভারত জুড়েগা, ইন্ডিয়া জিতেগা' মন্ত্র নিয়ে বিজেপিকে হারানোর ডাক দেওয়া হবে।রাহুলের এই ভাবনার প্রতিধ্বনি ফুটে উঠেছে বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার কণ্ঠেও। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে প্রিয়াঙ্কা এক দিকে বিরোধীদের 'ইন্ডিয়া' জোটের হয়ে আওয়াজ তুলেছেন। অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বই যে আসল ভাবনার বিষয়, সেটাও স্পষ্ট করেছেন। প্রিয়াঙ্কার অভিযোগ, বিরোধীদের বৈঠক হতেই প্রধানমন্ত্রী সব বিরোধী নেতানেত্রীদের চোর বলছেন। এত বড় নেতা, বিভিন্ন রাজ্যের শীর্ষ নেতা-নেত্রী, যাঁরা আজীবন দেশের জন্য লড়েছেন, জনতার সমস্যা নিয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের প্রধানমন্ত্রী চোর বলে অপমান করছেন।
প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে নীরবতা থেকে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান নিয়ে কটাক্ষ করে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন যে তিনি চাইলে ৩০ মিনিটের বক্তৃতায় ১০ মিনিট প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করতে পারেন। পরে ১০ মিনিট মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান কত নাটক, দুর্নীতি করেছেন, তা নিয়ে বলতে পারেন। শেষের ১০ মিনিট সিন্ধিয়া কীভাবে মতাদর্শ বদলে ফেললেন, সেটা নিয়ে বলতে পারেন। কিন্তু আমজনতার জন্য সবথেকে বড় বিষয় হয়ে উঠেছে মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বই। সেপ্টেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার 'ভারত জোড়ো যাত্রা' শুরু হলেও তখন রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন হবে। সেটাকে মাথায় রেখেই যাত্রার পরিকল্পনা চলছে। ভৌগোলিক কারণে পুরোটা পায়ে না হেঁটে কিছুটা রাস্তা অন্য পরিবহণ ব্যবহার করা যেতে পারে এবার।