নিজস্ব সংবাদদাতা: তিনি অসুস্থ, রোগা হয়ে যাচ্ছেন। এবার দিল্লির তিহাড় জেল থেকে আসানসোলের সংশোধনাগারে তাঁকে ফেরানো হোক। বার বার এমনই অনুরোধ করেছিলেন গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। একই আর্জি নিয়ে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে আবেদন করেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতর প্রাক্তন দেহরক্ষী সহগল হোসেন। সেই আবেদনে কোনও উত্তর দেয়নি আদালত। উল্টে ইডির করা আবেদনের ভিত্তিতে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালত মামলা স্থানান্তরিত করে দিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে। ফলে গরু পাচার সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার শুনানি হবে এবার দিল্লিতেই। অন্যদিকে, অনুব্রতরা বাংলায় কবে ফিরতে পারবেন, তার উত্তর সামনে আসেনি এখনও। বিচারকের পরবর্তী রায়দানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে তাঁদের।
গরু পাচার মামলা আসানসোল থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরের জন্য গত ২৮ জুলাই আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে আবেদন করেছিল ইডি। কিন্তু ২ বারই সেই আর্জি মুলতুবি করে আদালত। আবার কেন ইডি আসানসোল থেকে দিল্লিতে এই মামলা সরিয়ে নিয়ে যেতে চায়, সেই প্রশ্নও করেছিলেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। গত শনিবার এই মামলার শুনানিতে আদালত জিজ্ঞেস করে যে কোনও মামলা ইচ্ছে করলেই যে কোনও কেন্দ্রীয় এজেন্সি, যে কোনও রাজ্যের আদালতে নিয়ে যেতে পারে কিনা। আদালত আরও প্রশ্ন করে যে পিএমএলএ বা প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের মামলা যে ইডি করবে, তার সরকারি নির্দেশ বা গেজেট নোটিফিকেশন কি ইডি পেয়েছে? তার প্রেক্ষিতে ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র আইনের একাধিক ধারার উল্লেখ করে আবেদনের পক্ষে যুক্তি দেখান। বিরোধিতা করেন অনুব্রতর আইনজীবী শেখর কুণ্ডু এবং আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ। পাল্টা শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। কিন্তু বুধবার ইডির আবেদনেই সাড়া দিল আদালত। গরু পাচার মামলা আসানসোল সিবিআই আদালত থেকে স্থানান্তরিত করা হল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে।
২০০৫ সালের ১ জুলাই কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় তদন্তে নেমে ৪৪/১সি ধারায় মামলা স্থানান্তরের আবেদন চাইলে করতে পারে ইডি। আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন অনুব্রতর আইনজীবী। তিনি আবেদন করেন যে সিবিআইয়ের মামলা যত দিন না শেষ হচ্ছে, তত দিন যেন এই আবেদন স্থগিত করে দেওয়া হয়। দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক ইডির পক্ষই মেনে দেন। রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে গরু পাচার মামলা স্থানান্তরিত করার পাশাপাশি আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্ত তথ্য দিল্লির আদালতে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক চক্রবর্তী।