নিজস্ব সংবাদদাতা : পঞ্চায়েত নির্বাচনের আর ৩ দিন বাকি। তার আগে ইডির মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের জামিন পাওয়ার প্রচেষ্টা গেল বিফলে। গরু পাচারকাণ্ডে ধৃত অনুব্রত মণ্ডল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে জামিন না পেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ ছিল, আসানসোল জেলের মধ্যে গ্রেফতারের সময়ে ইডি আইন অনুযায়ী কাজ করেনি। কিন্তু ইডি জামিনের বিরোধিতা করে জানিয়েছে যে সিবিআই গ্রেফতার করার পরে অনুব্রত মণ্ডল জেলে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি জামিন পেয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করে অনুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি দীনেশ কুমার শর্মা জানিয়ে দিলেন যে ১৮ জুলাই এই বিষয়ে ফের শুনানি হবে। এর অর্থ, ৮ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অনুব্রত মণ্ডল দিল্লি হাইকোর্ট থেকে ইডির মামলায় জামিন পেলেন না।
অনুব্রতকে বেআইনিভাবে আটকে রাখা হয়েছে এই দাবি তুলে তাঁর আইনজীবীরা দিল্লি হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাসের মামলা করেছিলেন। আদালতের কাছে তাঁকে সশরীরে হাজির করানোর নির্দেশের আর্জি জানানো হয়। কিন্তু সেই মামলাও টেকেনি। অনুব্রতর আইনজীবী মুদিত জৈনের বক্তব্য ছিল যে ৮ মে-এর পর থেকে অনুব্রতকে বেআইনিভাবে তিহাড় জেলে রাখা হয়। তাঁকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ জারি করাই নাকি হয়নি। আদালতেও পেশ করা হয়নি। কিন্তু বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্থ প্রশ্ন তোলেন যে অনুব্রতের শরীর খারাপ বলে আইনজীবীরাই তাঁকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতে পেশ করার আর্জি জানান। শুনানি চলাকালীনই অনুব্রতর আইনজীবী মামলা প্রত্যাহার করে নেন।
জামিনের আর্জি মামলায় অনুব্রতর হয়ে তাঁর আইনজীবী নরেন্দ্র হুডা যুক্তি দেন যে আসানসোল জেলে অনুব্রতকে গ্রেফতারের পরে আইনমাফিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পেশ করা হয়নি। ইডির হয়ে পাল্টা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু বলেন যে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে গ্রেফতারের পরের দিনই আদালতে হাজিরার পরোয়ানার জন্য আবেদন জানানো হয়। আইনমাফিক সেখানেই গ্রেফতারির কথা আদালতকে জানানো হয়। এর আগে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে অনুব্রতর জামিনের আর্জি, আসানসোল জেলে ফেরত পাঠানোর আর্জি খারিজ করে দেন বিশেষ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংহ। অনুব্রতর তরফে বিচারক পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে মামলা করা হয়। ইডি জবাব জানানোর জন্য আরও সময় চাওয়ায় বিচারক অঙ্কুর ভরদ্বাজ ইডিকে ১৪ দিন বাড়তি সময় দেন। ১৯ জুলাই ফের শুনানি করা হবে। জানা গেছে যে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট, দিল্লি হাইকোর্ট কোথাও সুরাহা না মিললে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন তিহাড়ে বন্দি 'বীরভূমের বাঘ' অনুব্রত মণ্ডল।