নিজস্ব সংবাদদাতা: অবশেষে মুক্তি! ভয়াবহ ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার ৪০ বছর পর, বিলুপ্ত হওয়া ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার সাইট থেকে প্রায় ৩৩৭ টন বিপজ্জনক বর্জ্য স্থানান্তরের প্রক্রিয়া ঘটল বুধবার রাতে। যা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভোপাল জুড়ে।
বিষাক্ত বর্জ্য সহ বারোটি কন্টেইনার ট্রাক ভোপাল থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে ধর জেলার পিথমপুর শিল্প এলাকায় গতকাল রাত ৯ টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সেই বর্জ্য নষ্ট করার কাজ চলছে।
ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডি রিলিফ এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন ডিপার্টমেন্ট ডিরেক্টর স্বতন্ত্র কুমার সিং এদিন এই প্রসঙ্গে বলেন, “আবর্জনা বহনকারী ১২টি কন্টেইনার ট্রাক রাত ৯ টার দিকে যাত্রা শুরু করে। কন্টেইনার গুলির জন্য একটি গ্রিন করিডোর তৈরি করা হয়। যেগুলি সাত ঘন্টার মধ্যে ধর জেলার পিথমপুর শিল্প এলাকায় পৌঁছায়”।
তিনি আরও বলেন, “রবিবার থেকে প্রায় ১০০ জন লোক ৩০ মিনিটের শিফটে ট্রাকে বর্জ্য প্যাকেটবন্দী করে লোড করার জন্য কাজ করেছেন। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং প্রতি ৩০ মিনিট বাদে বাদে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে প্রত্যেককে”।
বর্জ্য নিষ্কাশন প্রক্রিয়া কি?
স্বতন্ত্র কুমার সিং এপ্রসঙ্গে বলেছেন, “যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে তিন মাসের মধ্যে বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলা হবে। অন্যথায় নয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে”।
তাঁর কথায়, প্রাথমিকভাবে বর্জ্যের একটি অংশ পিথমপুরের নিষ্পত্তি ইউনিটে পুড়িয়ে ফেলা হবে, এবং অবশিষ্টাংশ ছাই পরীক্ষা করা হবে। কোনও ক্ষতিকারক উপাদান অবশিষ্ট আছে কিনা তা নির্ধারণ করা হবে ওখান থেকেই।
কিছু স্থানীয় কর্মী দাবি করেছেন যে ২০১৫ সালে পিথমপুরে ১০ টন ইউনিয়ন কার্বাইড বর্জ্য পরীক্ষামূলকভাবে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল, যার পরে আশেপাশের গ্রামের মাটি, ভূগর্ভস্থ জল এবং জলের উত্স দূষিত হয়ে পড়েছিল। তাসি এবারে সবদিক ব্যবস্থা নিয়ে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
১৯৮৪ সালের ২ এবং ৩ ডিসেম্বর মধ্যবর্তী রাতে ইউনিয়ন কার্বাইড কীটনাশক কারখানা থেকে অত্যন্ত বিষাক্ত গ্যাস মিথাইল আইসোসায়ানেট (এমআইসি) লিক হয়ে যায়, যার ফলে ৫,৪৭৯ জন লোক প্রাণ হারান এবং ৫ লাখেরও বেশি মানুষ স্বাস্থ্য জনিত সমস্যায় ভোগেন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ শিল্প বিপর্যয়ের মধ্যে বিবেচিত হয়।