মাও মুক্ত ভারতের লক্ষ্যে বড় সাফল্য! আত্মসমর্পণ করল ৮৬ জন মাওবাদী

তেলেঙ্গানায় ৮৬ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
CRPF-gets-40k.jpg

নিজস্ব সংবাদদাতা: নিরাপত্তা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের ফল স্পষ্ট। কোমর ভেঙে চূড়ান্ত চাপে মাওবাদীরা। শনিবার তেলেঙ্গানায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করল মোট ৮৬ জন মাওবাদী, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ২০ জন মহিলা ক্যাডার। আত্মসমর্পণকারীরা মূলত ছত্তিশগড়ের সুকমা ও বিজাপুর সেক্টরে সক্রিয়ভাবে কাজ করতেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। প্রত্যেক আত্মসমর্পণকারীকে প্রাথমিকভাবে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে প্রশাসন।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যেই মাওবাদমুক্ত ভারত গড়তে চায় কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যেই জোরকদমে অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। ছত্তিশগড়ে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মাও বিরোধী অভিযান আরও তীব্র হয়েছে।

২০২৪ সালে বস্তার অঞ্চলে মাওবাদী দমন অভিযানে ২৮৭ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। ৮৩৭ জন আত্মসমর্পণ করেছেন, গ্রেফতার হয়েছেন হাজারেরও বেশি। ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসেই মৃত্যু হয়েছে ১৩০ জন মাওবাদীর, যার মধ্যে বস্তার রেঞ্জেই ১১০ জন।


এই পরিস্থিতিতে চাপে পড়ে সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে মাওবাদীরা। তাদের বক্তব্য, সরকার যদি অভিযান বন্ধ করে, তবে তারা যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহী। তবে সরকারের তরফে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ফলে মাওবিরোধী অভিযান জারি থাকছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

গত ৩০ মার্চ ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলায় ৫০ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছিলেন, যাঁদের মধ্যে ১৪ জনের মাথার দাম ছিল ৬৮ লক্ষ টাকা। এবার তেলেঙ্গানায় আত্মসমর্পণ করল আরও ৮৬ জন। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত ২২৪ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন।

mao odi.jpg

আত্মসমর্পণকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুধু অস্ত্রই নয়, তাঁরা এখন উন্নয়নের মূল স্রোতে ফিরে আসতে আগ্রহী বলেই মনে করছেন নিরাপত্তা বাহিনীর আধিকারিকরা।

এদিন ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া জেলায় এক আদিবাসী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখান থেকেই তিনি মাওবাদীদের উদ্দেশে বলেন, “অস্ত্র ছেড়ে মূলস্রোতে ফিরুন, উন্নয়নের পথেই ভবিষ্যৎ।” তাঁর এই বার্তার পরপরই তেলেঙ্গানায় আত্মসমর্পণের ঘটনা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

সব মিলিয়ে, ‘মাও-মুক্ত ভারত’ গড়ার পথে নতুন গতি পেয়েছে কেন্দ্রীয় অভিযানের রূপরেখা। এখন দেখার, মাওবাদী শিবির কতটা টিকে থাকতে পারে এই অভিযানের মুখে।