নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বিদ্যুৎ দপ্তরের এক ঠিকাকর্মীর। ঘটনাটি ঘটেছে, মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়গুড়িপাল থানার টিকরপাড়া এলাকায়। মৃত ব্যক্তির নাম হরিপদ মুর্মু (৩৫)। বাড়ি মনিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের শিরিষডাঙ্গা এলাকায়। ওই ব্যক্তি বিদ্যুৎ দপ্তরে ঠিকাদারের অধীনে কর্মী ছিলেন। জানা গিয়েছে, হরিপদ মুর্মু এবং নিবাস হেমরম দুজনে বিদ্যুতের সমস্যা হওয়ায় রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ টিকরপাড়া এলাকায় ইলেকট্রিক পোস্টে কাজ করতে যান। নিবাস নিচে থাকলেও পোস্টে ওঠেন হরিপদ। তারপরেই তিনি উপর থেকে নিচে পড়ে যান। তড়িঘড়ি স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে তাকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে। সোমবার ভোরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলে তদন্তে যান গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ। সোমবার রাতে ময়নাতদন্তের পর দেহ বাড়িতে পৌঁছালে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
গাড়িতে মৃতদেহ রেখে তারা হাজির হন গুড়গুড়িপাল থানায়। তাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ দপ্তরের গাফিলতির জন্য হরিপদর মৃত্যু হয়েছে। এর সমস্ত দায়ভার বিদ্যুৎ দপ্তরকে নিতে হবে। ওইদিন ঘটনাস্থলে হরিপদর সঙ্গে থাকা আরেক ঠিকাকর্মী নিবাস হেমব্রম বলেন, "আমরা ঠিকাদারের অধীনে কর্মী হিসেবে কাজ করি।
টিকরপাড়া এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা ছিল। আমাদেরকে পাঠিয়েছিল। আমাদের ঊর্ধ্বতন যে কর্মী রয়েছে তাকে জানানো হয়েছে লাইনে কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। সেই মতো বিদ্যুৎ বন্ধ করার পর তারা কাজ করছিলেন। তার কিছুটা দূরে আরও একটি পোস্টে কাজ করতে ওঠে হরিপদ। সেই সময় সে বিদ্যুতের লাইন চালু করে দেয় আমাদের না জানিয়ে। তখনই হরিপদ শক্ খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়। আমরা বিদ্যুৎ বন্ধের জন্য জানিয়েছিলাম, অথচ আমাদের না জানিয়ে বিদ্যুৎ চালু করে দেওয়া হয়েছিল। এর আগেও বিভিন্ন ইলেকট্রিক পোস্টে কাজ করার সময় আমরা না জানালে বিদ্যুৎ চালু করত না।" নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাকর্মীর অভিযোগ, "ভায়া মাধ্যমে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হয়। সরাসরি যোগাযোগ না থাকার ক্ষেত্রে এই গাফিলতি বারবার ঘটছে।" এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, বিদ্যুতের পোস্টে কাজ করার সময় লাইন চালু করে দেওয়ার ঘটনায় এর আগেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তারপরও হুঁশ ফেরেনি। সোমবার রাতে গুড়গুড়িপাল থানায় পরিবারের লোকজন সহ স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে দাবি তোলেন, মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার। পাশাপাশি দাবি তোলেন যে, এই ঘটনায় যাদের গাফিলতি রয়েছে তাদের শাস্তি দিতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দেয় গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ এলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে কর্মীদের নিরাপত্তা এবং ভায়া মাধ্যমে বিদ্যুতের লাইন সংযোগ ও বিচ্ছিন্ন করার কাজ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। দায়িত্বে থাকা বিদ্যুৎ দফতরের ঠিকাদারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও কোনও উত্তর পাওয়া যায় নি।