নিজস্ব সংবাদদাতা: ধনতেরাস হিন্দুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যা পাঁচ দিনের দীপাবলি উৎসবের শুরু চিহ্নিত করে। এটি একটি দিন যা সম্পদ এবং সমৃদ্ধি উদযাপন করে, বিশেষ করে সোনা কেনার গভীরভাবে রুটিষ্ঠ ঐতিহ্যের সাথে। 'ধনতেরাস' নামটি 'ধন' থেকে এসেছে, যার অর্থ সম্পদ, এবং 'তেরাস', যা হিন্দু ক্যালেন্ডারে চন্দ্র মাসের তেরো তারিখ নির্দেশ করে। এই দিনে, এটা বিশ্বাস করা হয় যে সোনা বা অন্যান্য ধাতু কেনা লক্ষ্মী, সম্পদের দেবীকে, নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানানো, আগামী বছরের জন্য সমৃদ্ধি এবং কল্যাণ নিশ্চিত করে।
ধনতেরাসে সোনা কেনার ঐতিহ্যের একটি ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় ভিত্তি রয়েছে। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, এই দিনে, দেবতা এবং দানবরা সমুদ্র মথন করে অমৃত (অমরত্বের অমৃত) পেতে। এই ঘটনার সময়, ধন্বন্তরি, দেবতাদের চিকিৎসক এবং বিষ্ণুর একটি অবতার, ধনতেরাসের দিনে অমৃতের বয়ন সহ সমুদ্র থেকে উঠে আসেন। এই পৌরাণিক ঘটনাটি সোনা কেনার মাধ্যমে স্মরণ করা হয়, যা অমরত্বের অমৃত এবং চিরস্থায়ী সম্পদ এবং স্বাস্থ্যের প্রতিশ্রুতির প্রতীক।
অনেকের জন্য, ধনতেরাস কেবল সম্পদের অর্জন সম্পর্কে নয় বরং শুভ শুরুতে নবায়ন এবং নেতিবাচক শক্তি পরিষ্কার করার বিষয়েও। সোনা, বিশুদ্ধতা, সম্পদ এবং শক্তির প্রতীক হিসেবে, এই অনুষ্ঠানগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লোকেরা তাদের ঘর পরিষ্কার করে, আলো দিয়ে সাজিয়ে এবং লক্ষ্মী এবং ধন্বন্তরিকে পূজা করার জন্য তাদের মন্দিরে, সমৃদ্ধি, স্বাস্থ্য এবং কল্যাণের জন্য প্রার্থনা করে। সোনার কেনার সাথে সাথে প্রায়শই প্রার্থনা এবং ভোগ দেওয়া হয়, এটিকে এর উপাদান মূল্যের বাইরে, একটি গভীর আধ্যাত্মিক লেনদেন করে তোলে।
ধনতেরাসের অর্থনৈতিক দিকটিও গুরুত্বপূর্ণ। এই উৎসবের সময় সোনার চাহিদার বৃদ্ধি সোনার বাজারকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে, দেশজুড়ে গয়না ব্যবসায়ীরা গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য বিভিন্ন ডিল এবং ছাড় প্রদান করে। এই সময়কালে উচ্চ চাহিদার কারণে সোনার দাম বৃদ্ধি পায় এবং অনেক গয়না ব্যবসায়ীর জন্য, ধনতেরাস বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত দিনগুলির একটি। উৎসবটি অর্থনীতিকে, বিশেষ করে গয়নার বাজারকে উৎসাহিত করে, ভারতের সাংস্কৃতিক অনুশীলন এবং অর্থনৈতিক কার্যকলাপের গভীর মিথস্ক্রিয়া তুলে ধরে।
উপসংহারে, ধনতেরাস দীপাবলি উৎসবের মধ্যে একটি মূল ভূমিকা পালন করে, সম্পদ এবং কল্যাণের স্বাগত জানানোর প্রতীক। এই শুভ দিনে সোনা কেনার ঐতিহ্য হিন্দু সংস্কৃতিতে গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত, কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবেই নয় বরং অর্থনীতিকেও উৎসাহিত করে। এটি একটি দিন যখন আধ্যাত্মিক এবং উপাদান একত্রিত হয়, সম্পদ এবং সমৃদ্ধির প্রতি ভারতীয় সংস্কৃতির সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে।