নিজস্ব সংবাদদাতা, অন্ডাল: ইসিএলে চাকরি পাওয়ার লোভে নিজের বাবাকেই পথের কাঁটা মনে করে বাবাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে পাকাপাকি পরিকল্পনা করেছিল এক খনি কর্মীর মেজো ছেলে আব্দুল হাকিম। তবে পুলিশের কঠিন প্রশ্ন উত্তরের ফাঁদে পড়ে শেষ রক্ষা হলো না। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে, তার মেজো ছেলের কথাবার্তায় অসংগতি দেখে, ঘটনার পনেরো দিনের মাথায় আব্দুল শেষমেষ ধরা পড়ে পুলিশের জালে। বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অপরাধে তারই মেজো ছেলের বলেই গ্রেপ্তার। ঘটনাটি ঘটে অন্ডাল থানার অন্তর্গত উখড়া ফাঁড়ি এলাকায়।
ধৃত আব্দুলকে দুর্গাপুর আদালত পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের আদেশ দেয়। হেফাজতে নিয়ে শনিবার ধৃত ওই ব্যক্তিকে নিয়ে এই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। এদিন ঘটনাটি সে কিভাবে সংঘটিত করেছিল সে সম্পর্কে একটি নাট্যরূপ প্রস্তুত করা হয়। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি কিভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছিল তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকলের সামনেই এই হত্যার ঘটনা কিভাবে সে সংগঠিত করেছিল তা পুলিশ প্রশাসনের কাছে তুলে ধরে।
পুলিশি জেরায় আব্দুল জানায়, গত ২৩ শে জানুয়ারি সন্ধ্যায় সে তার বাবাকে বাজার নিয়ে যাবো বলে টোটোতে চাপায়,সে নিজেই টোটো চালাচ্ছিল, পরে বাঁকলার সুভাষ কলোনীর অদূরে একটা জঙ্গলে নিয়ে যায় কয়লা রাখা আছে বলে। অসহায় বাবা তখনও জানতেন না যে সেদিন তার গুণধর ছেলে তাকে এই পৃথিবী থেকে চিরতরে সরানোর ব্যবস্থা করেছে। পিতৃস্নেহে সে তার ছেলের সাথে জঙ্গলের একটু ভিতরে যায়। সুযোগ বুঝে আব্দুল তার বাবা এতোয়ারি মিঞা কে হঠাৎ পিছন থেকে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। পরে হত্যা নিশ্চিত করতে এবং এটিকে একটি সাধারণ আত্মহত্যার ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তৎপর উখড়া ফাঁড়ির পুলিশের অনুসন্ধানে শেষ রক্ষা হল না আব্দুলের। শেষমেষ শুধু লোভের বসেই নিজের বাবাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে আপাতত শ্রীঘরে গুণধর ছেলে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় খনি কর্মী এতোয়ারি মিঞা ইসিএল এর চনচনি কোলিয়ারিতে কাজ করতেন। আর মাত্র তিন মাস পরেই অবসর গ্রহণ করতেন তিনি, বর্তমানে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর আর ৬০ বছরের এই হলে তার অবসর গ্রহণের সময় হয়ে যেত। আর সেই বিষয়কেই নজরে রেখে, তার ছেলে বাবার কাজ পাওয়ার লোভেই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে অন্ডাল থানার উখড়া ফাঁড়ির পুলিশ।