নিজস্ব সংবাদদাতাঃ তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন এক মহিলা সাংবাদিক। তারপরই তাঁকে সাসপেন্ড করেছে সিপিএম। এবং দলের ইন্টারন্যাল কমপ্লেন কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। দলের এই সিদ্ধান্তকে দুর্ভাগ্যজনক বললেন প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য। একই সঙ্গে এদিন ওই মহিলা সাংবাদিককে ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় কী হয়েছিল, তা নিয়েও মুখ খুললেন এই বাম নেতা।
এদিন সকালে এক মহিলা সাংবাদিক ইন্টারভিউয়ের জন্য তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। পরে ওই মহিলা সাংবাদিক সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওতে বলেন, ইন্টারভিউয়ের সময় কোথায় বসবেন, জানতে চেয়ে তাঁর কোলে বসে পড়েন প্রাক্তন বিধায়ক। মহিলা সাংবাদিকের বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর শোরগোল পড়ে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এই নিয়ে বামেদের খোঁচা দেন। কয়েকঘণ্টার মধ্যেই সিপিএম তন্ময় ভট্টাচার্যকে দল থেকে সাসপেন্ড করে। মহম্মদ সেলিম জানান, দলের ইন্টারন্যাল কমপ্লেন কমিটি তদন্তের পর যা সুপারিশ করবে, সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দলের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুণ্ণ তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, "একটি মেয়ে অভিযোগ করা মানেই যে সাসপেন্ড করতে হবে, দল যদি এটা মনে করে, তাহলে ঠিক কাজ করেছে। কাল অন্য কারও বিরুদ্ধে যদি কোনও মেয়ে অভিযোগ করে, তাঁকেও সাসপেন্ড করবে। এই রুটিনে যদি দল চলে যায়, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আমি আশা করেছিলাম, দল আমার কথা শুনবে। রাজ্য সম্পাদক হোয়াটসঅ্যাপে কিছু জানতে চেয়েছিলেন। আমি জানিয়েছিলাম। তারপরও এই সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের পরিবার বামপন্থী হিসেবেই পরিচিত। আমি মাথা উঁচু করে বামপন্থার সঙ্গে ছিলাম। মাথা উঁচু করেই থাকব। যদি কেউ মনে করেন, আমাকে হেনস্থা করে আমার রাজনৈতিক আদর্শ থেকে বিদ্যুত করতে পারবেন, তাহলে তিনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।"
এদিন সকালে কী হয়েছে, তা নিয়েও প্রাক্তন বাম বিধায়ক বলেন, “মেয়েটি সকাল ১০টা নাগাদ আসে। আমার বড় বৌদি দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। মিনিট ২০-২২ ইন্টারভিউ নেয়। এর আগেও মেয়েটি অনেকবার আমার বাড়িতে ইন্টারভিউ নিয়েছে। মেয়েটি অভিযোগ করেছে, এর আগেও আমি নাকি তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করেছি। তা সত্ত্বেও এতদিন চ্যানেলের এডিটরকে বলেনি। বলতে পারত, তন্ময় ভট্টাচার্যর ইন্টারভিউ আমি নেব না। মেয়েটি আমার ইন্টারভিউ নেওয়ার পর জানায়, আরও একজনের ইন্টারভিউ নিতে যাবে। ধরে নিচ্ছি, সেখানে সে গিয়েছিল। তারপর অফিসে গিয়ে মনে হল। বসকে জানাল। তারপর বসের অনুমতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও করল। বলুন তো মানসিক বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত অবস্থায় এত কাজ করা যায়? আমার বাড়ি থেকে বরাহনগর থানা ৫ মিনিট দূরে। সেই থানায় গেল না কেন? তার ক্যামেরাপার্সন তখন কিছু বলল না কেন? আমি কিছু মেলাতে পারছি না।”