নিজস্ব সংবাদদাতা: সাতসকালে বেহালায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মাটি বোঝাই লরির ধাক্কায় প্রাণ গেল বড়িশা হাইস্কুলের প্রাইমারি সেকশনের দ্বিতীয় শ্রেণীর পড়ুয়ার। মৃত্যু তার বাবার। দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ অবস্থা বেহালায়। মৃতদেহ আটকে রেখে চলছে বিক্ষোভ। উত্তেজিত জনতা সরকারি বাসে ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নেমেছে র্যাফ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ দ্বিতীয় শ্রেণীর পড়ুয়া সৌরনীল সরকার তার বাবার সাথে স্কুলে আসছিল। বেহালা চৌরাস্তার মোড়ে রাস্তায় সিগন্যাল পড়তেই রাস্তা পাড় হতে যান তারা। আর সেই সময় আচমকাই উলটো দিক থেকে একটি লরি এসে তাদেরকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় ওই শিশুটি। শিশুটির বাবা আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে, পড়ে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে। এই ঘটনার পরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে জনতা। স্থানীয়রা পুলিশের কাছে দাবি করে ঐ ঘাতক লরির চালককে আটক করুন। কিন্তু পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ। আর এরপরই পুলিশের গাড়ি ও একটি বাইকে আগুন লাগিয়ে দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। স্কুল চত্বরের সামনে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান তারা।
যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলে বেহালা চৌরাস্তা চত্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া ও নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় ডায়মন্ড হারবার রোড। আটকে পড়ে একের পর এক গাড়ি।
এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে নামানো হয় পুলিশ। নামে র্যাফও। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই সময় পুলিশ ও র্যাফের সঙ্গে তুমুল বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। শুরু হয় পুলিশি ধরপাকড়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় ইট। রক্ত ঝরে পুলিশের, রক্তাক্ত হয় স্থানীয় বিক্ষোভকারীরাও।
প্রায় ঘন্টা দু’য়েক পর শিশুটির মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের যে ভ্যান ও বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, দমকল এসে তা নেভানোর কাজ শুরু করে। আগুন নেভানোর পর সেগুলি রাস্তা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এখনও ক্ষোভে ফুঁসছে বিক্ষোভকারীরা। একজন মায়ের কোল খালি হয়ে গেল, এর জন্যে দায়ী পুলিশ, এদিন এমনটাই দাবি করতে থাকেন অভিভাবকরা। ঘটনাস্থল এখনও ঘিরে রেখেছেন একাধিক পুলিশ কর্মী।