নিজস্ব প্রতিনিধি: কাল রাখি বন্ধন উৎসব। সেই দিবসকে সামনে রেখে অভিনব উদ্যোগ নিল দাসপুরের সামাট প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিভিন্ন চিপসের প্যাকেট ও ফেলে দেওয়া বিভিন্ন প্লাস্টিকের সামগ্রী কুড়িয়ে তা দিয়ে ৩০০ র উপর রাখি বানাল স্কুলের ক্ষুদে পড়ুয়ারা। সেই রাখি দিয়েই স্কুলে পালন করা হবে রাখি বন্ধন। স্কুলের এহেন উদ্যোগের প্রশংসায় অভিভাবকরা।
এখন পৃথিবীর ভয়ঙ্কর বোঝা প্লাস্টিক। বিদ্যালয়ে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে হাতে ঘুরছে বিভিন্ন চিপস ও প্লাসটিকের প্যাকেট। ডাস্টবিনের থেকে উড়ে পড়ছে এদিক সেদিক। আমরা জানি এই প্লাস্টিক কোনোভাবেই আর মাটির সাথে মিশে যায় না। প্লাস্টিক ক্রমশ ঘিরে ধরছে আমাদের পৃথিবীর উপরিভাগ। আমাদের মুখে প্লাস্টিক জড়িয়ে দিলে আমরা যেমন শ্বাস না নিতে পেরে হাসফাস করি, পৃথিবীর অবস্থা সেই দিকে যাচ্ছে। এই প্লাস্টিক ব্যবহার করে তাকে মাটিতে না ফেলে সেগুলো দিয়ে কিছু বানালে কেমন হয়?
বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভাবনা বাস্তব রূপ পেল শিল্পী বিমান আদক ও প্রাক্তন ছাত্র=ছাত্রীদের হাত ধরে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ১ ব্লকের সামাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্লাস্টিকের বিভিন্ন ফেলে দেওয়া জিনিস যেমন চিপসের প্যাকেট, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেওয়া জলের বোতল, ডিম-ঘুগনির দোকানে দেওয়া প্লাস্টিকের চামচ ও তার পাশাপাশি কাগজের চায়ের কাপ দিয়ে রাখি তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হল ও রাখি বানাল স্কুলের কচিকাঁচারা। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিকাশ প্রামাণিক জানান যে তাঁদের বিদ্যালয়ে মোট ১১০ জন ছাত্র-ছাত্রী। প্রতি বছর বাজার থেকে রাখি কিনে বিদ্যালয়ে রাখি বন্ধন অনুষ্ঠান হয়।বর্তমানে প্লাস্টিকের বাড়বাড়ন্ত আর তার প্রভাব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পড়ছে নতুন প্রজন্মের উপর। ছাত্র-ছাত্রীদের প্লাস্টিক সম্বন্ধে সচেতনতার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি কোনো জিনিস ফেলনা নয়, নিজেরউদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ঘটাতে পারলে ফেলে দেওয়া নিজিস দিয়েও নতুন কিছু করা যায় এটাও ওদের বোঝাতে চেয়েছিলেন তাঁরা। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের হাতে তৈরী করে ফেলল একের পর এক রাখি। শিল্পী বিমান আদক জানান যে এদিন প্রায় তিনশো রাখি তৈরি হয়েছে। জানা যাচ্ছে এইসব রাখি দিয়েই সামাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবারের রাখি বন্ধন উৎসব পালিত হবে। বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা জানাচ্ছেন যে পুঁথিগত বিদ্যার মাঝে বিদ্যালয়ে এমন কর্মশালার মধ্যে দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের হাতে নতুন কিছু করছে। এই ভাবনা এবং প্রয়াস সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।