নিজস্ব সংবাদদাতা: হালে কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র বাড়ছে চোখের সংক্রমণ। চোখে লাল হয়ে যাওয়া। সঙ্গে ঘন ঘন পিচুটি বা চোখ থেকে জল পড়া। কেউ একে বলেন জয়বাংলা। কেউ বলে থাকেন কনজাংটিভাইটিস। কিন্তু দুটো কি এক? নাকি আলাদা?
সারা রাজ্যেই এখন চোখের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ নাজেহাল। দোকানে গিয়ে অনেকেই লাল চোখ নিয়ে বলছেন, ‘জয়বাংলার ওষুধ দিন।’ কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন কি এই নামটি কোথা থেকে আবির্ভূত হল? সেই ইতিহাস আগে জেনে নিন এখানে। আসলে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গোটা পশ্চিমবঙ্গে এই রোগ দেখা যায়। সেই সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গেও ঢুকে পড়ে এই রোগ। তখন ‘জয়বাংলা’ স্লোগানের রমরমা থাকার সূত্র ধরেই এই রোগের নাম দেওয়া হয় জয়বাংলা। কিন্তু এখন কনজাংটিভাইটিস বা পিংক আই নামে খ্যাত রোগ আর এই জয়বাংলা কি একই রোগ? কী বলেন বিশেষজ্ঞরা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন যেন সত্তরের দশকে যে জয়বাংলা রোগ পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তা হল ব্যাকটিরিয়াঘটিত একটা রোগ। এতে পিচুটি হয় বেশি। চোখ ফুলে যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। কিন্তু এখন যে কনজাংটিভাইটিস হচ্ছে, সেটা আর এটা আসলে নাকি এক নয়। বর্তমানে যে চোখের সংক্রমণে মানুষ বেশি ভুগছেন, সেটি হল ভাইরাসঘটিত এক সংক্রমণ। এতে পিচুটি হয় কম। চোখ দিয়ে জল গড়ায় বেশি। এটি কর্নিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে।
দু’টির মধ্যে কোনটি বেশি ক্ষতিকারক? বিশেষজ্ঞদের কথা অনুযায়ী, জয়বাংলা বা ব্যাকটিরিয়াঘটিত রোগটি কর্নিয়ার ক্ষতি করবে না। কিন্তু বর্তমানে যে ভাইরাসঘটিত কনজাংটিভাইটিস হচ্ছে, তা চোখের ক্ষতি করতে পারে। কারণ এটি কর্নিয়ার ক্ষতি করছে। এতে দৃষ্টিশক্তি পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এই রোগ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নইলে ভবিষ্যতে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত হলে কী করবেন?
১. চোখে ড্রপ ব্যবহার করুন দিনে অন্তত ৪ বার
২. চোখে বারবার ঠান্ডা জলের ঝাপ্টা দিন উপর থেকে
৩. উপর থেকে গরম সেঁক দিতে পারেন চোখে। এতে আরাম পাবেন
৪. চোখ কচলাবেন না ভুল করেও
৫. চোখে হাত দিলে হাত ধুতে হবে ভালো করে
৬. চশমা পরুন সারাদিন
৭. বেশি হাত দেবেন না চোখে