নিজস্ব সংবাদদাতা: বীরভূম আছে বীরভূমেতেই। রাজনীতির ইতিহাসে বীরভূম যেন সর্বদায় শিরোনামে থাকতে ভালোবাসে। কোথাও জেলা সভাপতির দুর্নীতির কাণ্ডে তো কোথাও ভয়ঙ্কর হত্যালীলায়। সবেই যেন বীরভূম চমক দেখায়। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাই বীরভূম যেন বড় মাপের ভোট ফ্যাক্টর।
তবে রাজনৈতিক কারবারিদের মতে, এবছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে খানিকটা ফিকে হয়ে গিয়েছে বীরভূমের তেজ। তাই তো ধিকিধিকি আগুন জ্বললেও, তা প্রভাব ফেলতে পারছে না। এর পিছনে কি কারণ সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ ব্যক্তিই?
যাই হোক এই মুহুর্তে বীরভূমের চিত্রটা খানিকটা এরকম। সিউড়িতে তৃণমূল ছাড়ছেন কর্মীরা, নিয়ে যাচ্ছেন বিজেপিতে। আবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগেই মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন তৃণমূল কর্মী। আর এর মধ্যে সবচেয়ে চমক লাগা বিষয় হল বগটুই কাণ্ডে স্বজনহারা এক পরিবারের সদস্যকে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
পঞ্চায়েত ভোটের লড়াইয়ে এবার নামল বগটুই হত্যাকাণ্ডের স্বজনহারা পরিবার। বিজেপির হয়ে মনোনয়নে জমা দেন, অগ্নিকাণ্ডে নিহত ডলি বিবির পুত্রবধূ সীমা খাতুন। অর্থাৎ ফিকে হয়ে যাওয়া বীরভূমে চমক বহন করছে সেই বগটুই…!
গত বছর ২১ মার্চ বীরভূমের বুকে বগটুই গ্রামে ঘটেছিল সেই ভয়ঙ্কর হত্যালীলা। প্রথমে খুন হন তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ এবং পরে জীবন্ত দ্বগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। রাতের অন্ধকারে ঘুমে আচ্ছন্ন থাকার সময় বেঘোরে প্রাণ হারান মহিলা থেকে শিশু প্রত্যেকে।
এই হাড়হিম করা হত্যালীলা নিয়ে রাজনীতি হয়েছে প্রথম থেকেই। ঘটনায় তিনদিনের মাথায় বগটুইয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উপস্থিতিতে নিহতদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় আর্থিক সাহায্য। দেওয়া হয় চাকরিও।
কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই সকল গ্রামবাসীদের মুখেই দেখা যায় ক্ষোভ। স্বজনহারাদের বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলে দেখা যায় মিহিলাল শেখকে।
রাজনীতির মোড় যে তখন থেকেই বদলাচ্ছিল, তেমনটা আঁচ করায় যাচ্ছিল। আর তার হাতেনাতে প্রমাণ মিলল এই পঞ্চায়েত ভোট মরশুমে।
এক্ষেত্রে তৃণমূলের দাবি, এখানে প্রচুর টাকার খেল রয়েছে। আর বিজেপির দাবি, তৃণমূলের ওপর আর ভরসা নেই সাধারণের। কারণ কি তা তর্ক সাপেক্ষ, তবে সত্যি একটায়; বীরভূম আছে বীরভূমেই!