নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়েই নাবি ধোসার ব্যাপক প্রকোপ দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দিশেহারা আলু চাষীরা। কৃষকদের দাবি, চাষের শুরুতে দুর্যোগের জেরে বৃষ্টি আর তার কারণে দুবার আলু লাগাতে হয়েছে এ বছর কৃষকদের। ফলে আলু চাষ সময়ের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে গেছে। আলু চাষের মাঝ পথে আবার আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনায় বিপাকে পড়তে হয় কৃষকদের। দেরিতে চাষ শুরু হওয়ায় এখনও মাঠে আলুর ফলন বাকি, এখনও প্রায় একমাস লাগবে আলুর সম্পূর্ণ ফলন হয়ে জমি থেকে আলু তুলতে।
চাষিদের কথায়, দেরিতে চাষ হওয়ায় ফলন হয়ে ফসল তুলতেও দেরি হচ্ছে। মাঠে আলু থাকলেও উধাও শীত। শীত উধাও হতেই আর্দ্রতার পরিমান বেড়ে গিয়েছে। আলু চাষের পক্ষে শীত উপযোগী। শীত না থাকলে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ার আশঙ্কা থাকে। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে আলু চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। চন্দ্রকোনার আলু চাষিদের দাবি, ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকটাই, বাজারে চাহিদা প্রচুর সমস্ত ওষুধের, সঠিক সময়ে তা পাওয়ায় যাচ্ছে না। যে ঔষধ ৯৫০ টাকা দাম ছিল বর্তমানে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলেও দাবি কৃষকদের।
কৃষকরা আলু গাছ বাঁচাতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন ঋণ নিয়ে দামি কীটনাশক কিনছেন। কৃষকদের আরও দাবি, ৫০ দিনের গাছ এখনই নাবি ধোসার ফলে গাছ নষ্ট হয়ে গেলে ফলন স্বাভাবিকভাবেই কম হবে, খরচা উঠবে না। কৃষকদের আশঙ্কা এবছর চাষে লোকসান হবে। কৃষকের সারা বছর চলবে কিভাবে ? মহাজন বা সরকারের থেকে কৃষি ঋণ নিয়ে চাষ, তার টাকাই বা কি করে মেটাবে? নাবি ধোসার জেরে এমনই সব দুঃশ্চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে কৃষকদের মাথায়।
কৃষকদের দাবি কৃষি দপ্তর এই বিষয়ে যেন নজর দেয়,পাশাপাশি কৃষকরা দাবি তুলছে কৃষি ঋণ মুকুবের। আলু জমিতে নাবি ধোসার প্রকোপের বিষয়টি স্বীকার করেছেন কৃষি দপ্তর। চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের সহ কৃষি আধিকারিক শ্যামদুলাল মাসান্ত কৃষকদের সতর্ক করে বলেন, মেঘলা কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া সাথে আদ্রতা বাড়ায় নাবি ধোসার প্রকোপ দেখা দিয়েছে, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনাকেই দায়ী করছেন তিনি। এ নিয়ে চাষীদের কি করণীয় তাও পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি নাবি ধোসার জেরে কীটনাশক প্রয়োগের চাহিদা অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় চাষীদের দাবি কীটনাশকের দাম দ্বিগুণ দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এবিষয়ে ব্লকের সহ কৃষি আধিকারিক জানান, '' নির্ধারিত দামের বাইরে গিয়ে কৃষকদের থেকে অতিরিক্ত দাম নিলে তার খবর আসলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। "