নিজস্ব সংবাদদাতা: জোরালো শব্দ, চারিদিকে কালো ধোঁয়া আর মুহুর্তে কারোর বাড়ির উঠোনে গিয়ে পড়ল হাত তো কারোর টালির ছাদে গিয়ে পড়ল পা। এমনই ভয়ঙ্কর দৃশ্যের সাক্ষী থাকল দত্তপুকুর। ফের রাজ্যেরই বুকে ঘটে গেল আরও এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা। আর সৌজন্যে সেই বাজি কারখানার তত্ত্ব।
রাজ্যের বুকে গজিয়ে ওঠা একাধিক বাজি কারখানার যেরকম কোনও সঠিক হদিশ মেলে না আগের থেকে; ঠিক তেমনি একটি বিস্ফোরণের ঘটনা প্রশ্ন তুলে দেয় একাধিক। রাজ্যে এমন ঘটনা কিন্তু প্রথম নয়, এর আগে এগরা, দক্ষিণ ২৪ পরগণার একাধিক এলাকা, মুর্শিদাবাদের একাধিক এলাকা এরকম স্বল্পবিস্তর বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের সাক্ষী থেকেছে। আর ততোবারই উঠে এসেছে বেআইনি বাজি কারখানার তকমা। বিরোধীদের মুখে শোনা গিয়েছে ‘বোমা শিল্পের’ কথা। বেশ ততোটুকুই! আবার সবকিছু যেমনটা তেমনটাই চলেছে।
এবারের দত্তপুকুর দেখাল নৃশংসতার চিত্র। যা নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্যই। এতো ভয়াবহ বিস্ফোরণ, কি তৈরি হত সেখানে? বাজি তৈরি হলে কি সত্যিই এতোটা জোরালো হত বিস্ফোরণ? এই ঘটনায় কি যোগ রয়েছে কোনও সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মের? এরকমই একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে দিয়েছে দত্তপুকুর বিস্ফোরণ কাণ্ড।
যা জানা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের তীব্রতা দেখে সন্ত্রাস যোগ সন্দেহ দানা বাঁধছে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মনে। তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন ৯ বছর আগেকার খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের কথা। যে ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছিল জামাত-উল-মুজাহিদিনের মত জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম।
প্রাক্তন গোয়েন্দাদের একাংশের মতে খাগড়াগড়ে জামাত-যোগের মত দত্তপুকুর বিস্ফোরণ কাণ্ডেও জঙ্গি-যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কথায়, ‘বাজির কারখানা একটা ভালো আড়াল। পিছনে বোমা না আইইডি কি তৈরি হচ্ছিল তা কে বলতে পারবে’।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে, বারাসাত শহর থেকেও বিকট শব্দ শোনা যায়! আর বিস্ফোরণস্থল থেকে ১ কিলোমিটার দূরে, বেরো-নারায়ণপুরে পরিত্যক্ত ইটভাটায় চলছিল আরও একটি বাজি কারখানা। যা কি না আস্ত যেন বোমার গবেষণাগার। আর এই সব কিছুই যেন জঙ্গি-যোগকে আরও জোরালো করছে।