পশ্চিম মেদিনীপুর: ফাইভ জির যুগে ডিজিটাল মাধ্যমে এবার ডিজিটাল লেনদেনের পাশাপাশি ডিজিটাল ফ্রড ঘটলো, তাও আবার জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরে। যার জেরে লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে থানায় অভিযোগ করলেন সিএসপি ও সিএসসির মালিকরা। ঘটনা ক্রমে জানা যায়, গ্রাম বাংলার মানুষদের কাছে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা, চাষীদের টাকা, বার্ধক্য ভাতা সহ রিচার্জের মাধ্যমে টাকা গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিতে ছোট ছোট সিএসপি ও সিএসসির ব্রাঞ্চ খুলেছে শিক্ষিত বেকার যুবকরা। এই সিএসপি এবং সিএসসির ব্রাঞ্চগুলো বেশিরভাগই বেসরকারি ব্যাংক এবং আধা সরকারিও সরকারি ব্যাংকের হয়ে থাকে। মূলত গ্রামের বেকার শিক্ষিত যুবকরা চাকরি-বাকরি না পেয়ে ঘরের জমি বন্ধক দিয়ে সেই ছোট ছোট অফিস খুলে তারা গ্রামের মানুষকে অতি সহজেই অনলাইনের টাকা নগদে পাইয়ে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি বেশকিছু যুবক তাদের কাছে আসে এবং জানায় তারা নতুন অ্যাপস নিয়ে এসেছে যার নাম PND Pay।
এই অ্যাপসের মাধ্যমে তারা টাকা ট্রানজাকশন করলে একদিকে যেমন বেশি মুনাফা পাবে তেমনই অন্যদিকে অতি সহজেই লক্ষ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার করতে পারবে। সহজ সুবিধা এবং বেশি মুনাফার আশায় এই যুবকরা সেই সময় এই অ্যাপস ডাউনলোড করে তাদের মোবাইল এবং কম্পিউটারে। মাস খানেক বেশ চলছিল, কিন্তু গত ২৮ তারিখ থেকে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই সিএসপি চালানো যুবকদের অভিযোগ তারা ২৮ তারিখ সকালে উঠে দেখে তাদের মোবাইল এবং ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থেকে অ্যাপসটি উধাও হয়ে গিয়েছে। এরই সঙ্গে তাদের যোগাযোগের মাধ্যম এবং যারা এই অ্যাপসের দায়িত্ব ছিলেন তাদের ফোন সুইচ অফ।
একাধিকবার ফোন করে যখন তারা নিজের টাকা ওয়ালেট থেকে তুলতে পারছিলেন না সেই সময় তারা ভেঙে পড়েন। অবশেষে তারা দ্বারস্থ হন মেদিনীপুরের সাইবার ক্রাইমে। এরকম মেদিনীপুর জেলা শহরে প্রায় ১০-১৫ জন সিএসপি, সিএসসি এবং অনলাইন ট্রানজেকশন মালিক তারা দ্বারস্থ হন থানায়। কারও ৫০ হাজার আবার কারও ১ লাখ টাকা এই অ্যাপসে লাগানো রয়েছে। যার জেরে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা ফ্রড হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। তবে তাদের প্রত্যেকের একই দাবি, অবিলম্বে তাদের ফ্রড হওয়া টাকা ফেরত দিতে হবে এবং এই কেসে যারা অভিযুক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে নতুন করে কেউ এই ফ্রড কেসে পা না দিয়ে এই অ্যাপস ডাউনলোড করেস সেই ব্যবস্থাও নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। যা ঘিরে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে মেদিনীপুর জেলা শহরে।