হাবিবুর রহমান, ঢাকাঃ জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শাহবাগ মোড়ে তৃতীয় দিনের মতো রবিবার পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সনাতন ধর্মাবলম্বী কয়েক হাজার মানুষ। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ, সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চাভূক্ত সংগঠন, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ ও বাংলাদেশ সনাতন পার্টির নেতৃত্বে আজ ঢাকার শাহবাগ মোড় হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিক্ষোভ ও স্লোগানে উত্তাল হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু মন্দির ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রবিবার অর্থাৎ আজ এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর ২টো থেকে প্রতিবাদী ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা শাহবাগে জড়ো হতে থাকেন। হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে টানা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অবরোধকারীরা। এই সময় শাহবাগ মোড়ের চারপাশ হাজার হাজার মানুষ স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে। এক পর্যায়ে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনকারীরা বলেন, "প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির, প্রতীমা, হিন্দুদের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়। তাদের দেশত্যাগের হুমকি দেওয়া হয়। রাতের অন্ধকারে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়। বিগত দিনে হওয়া হিন্দু নির্যাতনের কোনও বিচার না হওয়ায় নির্দ্বিধায় এই নারকীয় কর্মকাণ্ড চলে। এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।"
জানা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে হিন্দু নিধন, হিন্দু নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা রোধে হিন্দু সুরক্ষা আইন প্রণয়নসহ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানানো হয়। ইতিমধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে। শাহবাগে বিক্ষোভকারীরা হিন্দুদের শান্তিপূর্ণভাবে জীবনধারণ ও সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা, নিজ ধর্ম পালনের সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়ন, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়া রোধ, ধর্মান্ধ মৌলবাদী, মানবতা ও স্বাধীনতাবিরোধী অপকর্মের দ্বারা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা রোধসহ ২০ দফা দাবি তুলে ধরেন।
অপরদিকে আজ সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়। সেখানে বক্তারা অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির, প্রতিমা, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু মা-বোনদের ধর্ষণ করা হয়। দেশত্যাগের হুমকি দেওয়া হয়। রাতের অন্ধকারে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। বিগত দিনে হওয়া হিন্দু নির্যাতনের কোনো বিচার না হওয়ায় নির্দ্বিধায় এই নারকীয় কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।