নিজস্ব সংবাদদাতা: এএনএম নিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে, আরজি কর মেডিকেল কলেজের ঘটনা সম্পর্কে, বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ বলেছেন, "এখনও পর্যন্ত পুলিশ যাকে তড়িঘড়ি ধরেছে তিনি হলেন একজন সিভিক পুলিশ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল অভিযুক্তের পেশা কিন্তু এড়িয়ে গেছেন। পুলিশ তার ঘাড়ে দায় নিতে চাইছে না। বিভিন্ন হত্যা সেটা আনিস খান হোক বা আরজি কর, এইসব ঘটনায় কিন্তু সিভিক পুলিশের নাম জড়াচ্ছে এবং সেই দপ্তরের প্রধান হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিভিকের চাকরি কারা পায়? যারা তৃণমূল কর্মী তারাই পায়। রাজ্য সরকারের স্থায়ী চাকরি দেবার ক্ষমতা নেই তাই তারা পার্টির লোকেদের হাতে পয়সা দিতে এই চাকরির বন্দোবস্ত করেছে। এইসব নিয়োগের মধ্যে কোনও স্বচ্ছতা নেই। যেই ঘটনাকে দেখে প্রাথমিকভাবে খুন বলা যায় সহজেই, যেহেতু মহিলা ডাক্তারকে ধর্ষণ করে তার কলারবোন ভেঙে খুন করা হয়েছিল, সেটা দেখেই পুলিশ প্রথমে বলে দিল তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তার বাড়িতেও এই খবর পাঠিয়ে দেওয়া হল। অর্থাৎ আত্মহত্যার বলে খুনের ঘটনাটিকে লোক আবার কিন্তু চেষ্টা করা হয়েছিল। মহিলা ডাক্তারের শরীরকে যেভাবে তছনছ করা হয়েছে যেকোনও বাচ্চাও বলে দেবে এটা কারোর একার কাজ নয়। এই পাশবিক অত্যাচার একা করা যায়না। বিভিন্ন আলোচনা এবং কল রেকর্ড যা ফাঁস হচ্ছে সেখান থেকে কিন্তু স্পষ্ট উঠে আসছে যে এই ঘটনায় শাসকদলের কারোর হাত রয়েছে। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাত থাকতে পারে বলে বিভিন্ন সন্দেহের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এরই মধ্যে যাতে কেউ জড়িয়ে না পড়ে সেই জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন এনকাউন্টার করা উচিত, ফাঁসি দেওয়া উচিত। জনগণের রাগকে প্রশমিত করার জন্য, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনার দিকে তাকিয়ে, পশ্চিমবঙ্গে শাসক দল ভয় পেয়ে গেছে। ঠিক যেমন ধনঞ্জয়ের সময় তার মুখ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ১৪ বছর জেল খেটে বেরিয়ে আসার পরেই তাকে ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হলো, যাতে সে হেতাল পারেকরের মৃত্যু সম্পর্কে মুখ খুলতে না পারে। এই একই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কোথাও একটা গিয়ে যেন ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে এবং সত্যকে লুকোবার চেষ্টা করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এতটাই অপদার্থ যিনি হাসপাতালের নিরাপত্তা দিতে পারেন না, উল্টে তিনি তুলো, গজ, সেলাইনের বোতল, ক্যান্টিনে সিন্ডিকেট চালায় তৃণমূলকে দিয়ে। নামেই সেখানে একটা করে নিরাপত্তারক্ষী থাকে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যর্থ। অবিলম্বে তার পদত্যাগ করা উচিত।
পুলিশ কমিশনারের সিপি বিনীত বাবুও সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন। মানুষের ট্যাক্সের টাকায় মাইনে পান তিনি। তিনি তার কাঁধে যে অশোক স্তম্ভ লাগান, তার মর্যাদা রক্ষা করার পরিবর্তে তৃণমূলের দলদাস হয়ে গেছেন। গর্জে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। চারিদিকে আন্দোলন এবং আলোচনা চলছে। আমি মানুষকে বলবো যে রুগীরা হাসপাতালে, ডাক্তাররা হাসপাতালে একেবারেই নিরাপদ নয়। এর জন্য দায়ী তৃণমূল সরকার। আমরা নির্বাচনে দেখেছি কিভাবে ছাপ্পা ভোটে সাহায্য করে পুলিশ। আমরা নির্বাচনে দেখেছি যে কিভাবে মানুষের প্রাণহানি করে, ভোট লুট করে তৃণমূলের গুন্ডারা। তৃণমূলের গুন্ডা এবং পুলিশের সখ্যতার কথা সবাই জানে। এই সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে ফেলতে হবে। মায়েদের, বোনেদের, দিদিদের নিজেদের ও তাদের সন্তানদের প্রাণ বাঁচাতে, তৃণমূল এবং পুলিশের সহাবস্থান নিয়ে চলা তৃণমূল সরকারকে কড়াভাবে উৎখাত করতে হবে।"