বেআইনিভাবে সরকারি জায়গা দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ

তৃণমূল পরিচালিত চন্দ্রকোনা পৌরসভার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন।

author-image
Adrita
New Update
ফ

নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দ্রকোনাঃ বেআইনিভাবে সরকারি জায়গা দখল করে সরকারি বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ শিক্ষক দম্পতির মেয়ের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে পৌরসভাসহ একাধিক সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও বেদখল হওয়া সরকারি জায়গা পুনরুদ্ধার না হওয়ায় পৌরসভায় গিয়ে বিক্ষোভে সামিল এলাকাবাসী। ১৫ দিনের মধ্যে নির্মাণ কাজ ভেঙে সরকারি জায়গা পুনরুদ্ধার করা হবে দাবি পৌরসভার। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে তৃণমূল পরিচালিত পৌরসভা ও শাসকদলকে তীব্র কটাক্ষ বিজেপির। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে চন্দ্রকোনায়।

ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড গোপালপুর এলাকার। জানা যায় চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা বিজয় কৃষ্ণ দোলুই এবং মাধবী দোলুই, দুইজনেই পেশায় শিক্ষক সরকারি চাকুরীজীবী। তাদের মেয়ে বীথিকা দোলুই পৌরসভার হাউস ফর অল প্রকল্পে বাড়ি পেয়েছে। সেই বাড়ির প্রাচীর নির্মাণ হয়েছে পৌরসভার সরকারি জায়গাতে। সরকারি জায়গা দখল করে সরকারি বাড়ি নির্মানের অভিযোগ তুলে এলাকার মানুষজন একাধিকবার চন্দ্রকোনা পৌরসভাতে লিখিত অভিযোগ জানায়। লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় চন্দ্রকোনা পৌরসভাতে বিক্ষোভে সামিল হয় এলাকার মানুষজন।

এলাকার মানুষের দাবী বিথীকা দোলুই বর্তমানে সাত নম্বর ওয়ার্ড গোপালপুর এলাকায় থাকে না। কারণ বিথীকা দোলুইয়ের বিয়ে হয়েছে। শ্বশুরবাড়ি  অন্যত্র। এলাকার মানুষের দাবী ওই জায়গার পাশে থাকা গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজে লাগবে। স্কুলের স্বার্থে ওই জায়গা আগে ব্যবহার হতো বলে দাবি এলাকাবাসীর। বেআইনিভাবে বাড়ির প্রাচীর নির্মাণ হওয়ার অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবারও পৌরসভায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখায় এলাকাবাসী।জানা গেছে, এলাকাবাসী পৌরসভার চেয়ারম্যানের রুমের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে সামিল হওয়ার পরেই জরুরী ভিত্তিতে সমস্ত কাউন্সিলর ও পৌর আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন চন্দ্রকোনা পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রতিমা পাত্র।

এ বিষয়ে চন্দ্রকোনা পৌরসভার চেয়ারম্যান জানান, আমাকে এর আগেও লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে আমি আজই ওদের নোটিশ দিচ্ছি ১৫ দিনের মধ্যে কাজ না হলে পৌরসভা কঠোর ব্যবস্থা নেবে। " যদিও পৌরসভার জায়গা দখল করে বাড়ি নির্মাণকে তীব্র ভাবে কটাক্ষ করেছে বিজেপি আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক সুদীপ কুশারি। তিনি তৃণমূল পরিচালিত চন্দ্রকোনা পৌরসভার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন, শাসকদলকেও আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি।

বিজেপি নেতা বলেন," তৃণমূল মানেই চোর,শাসকদলের নেতারা কাটমানি নিচ্ছে আর বিভিন্ন লোককে সরকারি সম্পত্তি হস্তান্তর করছে। " সূত্রের খবর ইতিমধ্যে ওই বিতর্কিত জায়গা ভূমি দপ্তরের তরফে খতিয়ে দেখে পৌরসভাকে জানিয়েও দিয়েছে, যে জায়গায় নির্মাণ কাজ চলছে তাতে সরকারি জায়গাও রয়েছে। এলাকাবাসী চাইছেন নির্মাণ কাজে সরকারি জায়গা পড়া সত্বেও পৌরসভা বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কোনো উদ্যোগ নেয়নি, অবিলম্বে ওই নির্মাণ ভেঙে স্কুলের স্বার্থে সরকারি জায়গা পুনরুদ্ধার করুক পৌরসভা দাবি এলাকাবাসীর। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই শিক্ষক দম্পতি পরিবারের তরফে মাধবী দোলুইয়ের দাবি, " তার মেয়ে পৌরসভা থেকে বাড়ি পেয়ে বাড়ি নির্মাণ করছে নাচের স্কুল করার জন্য,তাকে তারা জায়গাটি দানপত্র করে দিয়েছে। তবে সরকারি জায়গায় নির্মাণ কাজ হচ্ছে মানতে নারাজ ওই শিক্ষক দম্পতি। শিক্ষক দম্পতি বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও চন্দ্রকোনা পৌরসভার চেয়ারম্যান অবশ্য মেনে নিয়েছেন পৌরসভা মেপে দেখেছে সরকারি জায়গার কিছুটা অংশ দখল করে নির্মাণ কাজ হয়েছে,মালিক পক্ষ না ভাঙলে নোটিশ দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে পৌরসভা ভেঙে ফেলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পৌরসভার চেয়ারম্যান। এখন দেখার সরকারি জায়গা বেদখল হওয়া ঠেকাতে পৌরসভা কি ভূমিকা নেয়। 

Add 1