নিজস্ব সংবাদদাতা: কীভাবে ঘটল ভয়ানক বিস্ফোরণ? দত্তপুকুরকাণ্ডে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে শুধু সেই ঘটনাস্থল। বিস্ফোরণস্থলে পড়ে থাকা ইটের দেওয়ালের টুকরো থেকে শুরু করে পারিপার্শ্বিক জায়গাজুড়ে এই উত্তর লুকিয়ে, মনে করেন ফরেন্সিক বিভাগের আধিকারিকেরা। তবে ঘটনাস্থলে আমজনতার অবাধ প্রবেশের ফলে তথ্যপ্রমাণ কিছুটা হলেও নষ্ট হতে পারে বলে মনে করেন রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।
আগের সপ্তাহের রবিবার হঠাৎ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দত্তপুকুরের মোচপোল এলাকা। সেই ঘটনায় ৯ জন প্রাণ হারায়। তবে বিস্ফোরণের পরে এক সপ্তাহের বেশি কেটে গেলেও ঘটনার কারণ নিয়ে এখনও অন্ধকারে রয়েছে পুলিশ। বিস্ফোরণস্থলে বাজি তৈরির মশলা নাকি বোমা নাকি অন্য কোনও রাসায়নিক মজুত ছিল, তা নিয়েও ধন্দ কাটছে না পুলিশের। যদি মজুত রাখা বাজি তৈরির মশলা থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে থাকে, তা হলে তা এতটা ভয়াবহ হয় কীভাবে সেটাও একটা প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। তবে তাদের রিপোর্ট সম্পর্কে পুলিশকর্তারা নির্দিষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। তবে রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিভাগে কাজ করা বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থলের মধ্যেই বহু অজানা প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে বলে মনে করেন। বিশেষজ্ঞেরা আরও জানাচ্ছেন যে বাজি বা বোমা তৈরির মশলাতেও বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দেওয়া হয়। কোনও রাসায়নিক শব্দ তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়। কোনও রাসায়নিক আবার চাপ সৃষ্টি করে আর কোনওটা আবার কম্পন। দত্তপুকুরের বিস্ফোরণস্থলে ইটের দেওয়াল ছাড়াও ছাদও ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েক ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। ফরেন্সিক আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন যে খোলা জায়গার তুলনায় কোনও বদ্ধ জায়গায় বাজি বা বোমা ফাটানোর প্রভাব বেশি হয়। ধ্বংসাবশেষের দেওয়াল কোন দিকে পড়ে আছে, তা দেখেও অনেক উত্তর পাওয়া যায়। মূলত পটাশিয়াম নাইট্রেট, সালফার, চারকোল, বেরিয়াম নাইট্রেট জাতীয় রাসায়নিকই ব্যবহৃত হয়। এই সমস্ত রাসায়নিকের কয়েকটির কোনও ধরনের অগ্নি সংযোগ ছাড়াই এমন বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। তবে বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থলে সাধারণ মানুষের অবাধ প্রবেশের ফলে ঘটনাস্থলের প্রতিটি কোণে পড়ে থাকা নানা নমুনা নষ্ট হয় যেতেও পারে। কাজ কঠিন হবে ফরেন্সিকের ও সময় লাগবে তদন্তে। সব প্রশ্নের উত্তর পেতে গোটা ঘটনার তদন্ত যত তাড়াতাড়ি শেষ করা যায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে।