নিজস্ব সংবাদদাতাঃ এবছর ১৫ আগস্ট ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস পালন করা হবে। ভারতের স্বাধীনতা মানেই ত্যাগ এবং সংগ্রাম। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদান ছাড়া ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন সম্ভব হত না। দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্রিটিশ রাজের অধীনে থাকা দেশ এবং দেশবাসীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম বলতে গেলে প্রথমেই আমরা যাদের মনে করি তারা হলেন রানী লক্ষ্মী বাঈ, সুভাষ চন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, সর্দার বল্লভাই প্যাটেল প্রমুখ। তবে এই জনপ্রিয় মুখগুলি ছাড়াও আরও অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন যারা ভারতের জন্য তাদের নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। সময়ের সঙ্গে এই যোদ্ধাদের নাম অনেকেই ভুলে গিয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের এমনই এক অখ্যাত যোদ্ধা হলেন কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়।
কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় ভারতের স্বাধীনতার লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন উল্লেখযোগ্য নেত্রী। হরিন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। এরপর তিনি লন্ডন চলে যান। ১৯২৩ সালে মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারেন এবং আন্দোলনে যোগদানের জন্য কমলাদেবী লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে আসেন।
১৯২৬ সালে তিনি মাদ্রাসের প্রাদেশিক বিধানসভায় অংশ নেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হয়ে অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স-এর প্রতিষ্ঠাতা মার্গারেট ই ক্যাসিন্সের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এভাবে তিনি ভারতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রথম মহিলা নেত্রী হয়ে ওঠেন।
১৯২৭ সালে তিনি অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার প্রথম সংগঠনিক সচিব হন। পরবর্তী কয়েক বছরে, অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স -এর শাখা এবং স্বেচ্ছাসেবক কর্মসূচি সহ, সম্মানিত জাতীয় সংগঠন হয়ে উঠে এবং এর মাধেমে আইনি সংস্কারের জন্য দৃঢ়ভাবে কাজ করেন।
১৯৪৪ সালে কমলাদেবী কলকাতা থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ছোট্ট শহর বাঁকুড়ার একটি অনাথ আশ্রম দেখতে পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ করেন। এআইডব্লিউসি-র সভাপতি হিসাবে কমলাদেবী ত্রাণ সরবরাহের জন্য স্থানীয় মহিলা সংগঠনগুলিকে একত্রিত করেছিলেন। তিনি দেশের নারীদের সুরক্ষায় বিশেষ অবদান রেখেছেন। ‘ভারতীয় নারীর সচেতনতা’ নামে একটি বইও লিখেছেন।