নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলার সংস্কৃতিতে দুর্গাপুজো হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যেখানে সমাজের সকল স্তরের মানুষ একত্রিত হয়ে আনন্দ এবং উৎসবের মাঝে ডুবে যায়। কিন্তু কিছু গোষ্ঠী, বিশেষ করে চিকিৎসক, পুলিশ কর্মী এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা, এই grand occasion-এ সাধারণত ব্রাত্য রয়ে যান। তারা তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যস্ত থাকেন, ফলে উৎসবের আনন্দ থেকে তারা বঞ্চিত হন। এর মধ্যে আছেন সাংস্কৃতিক শিল্পীরা—যেমন নৃত্যশিল্পী এবং পারফর্মাররা—যারা সাধারণত উৎসবের সময় দর্শকদের আনন্দে মাতিয়ে রাখেন।
শান্তিপুরের জীবন্ত মডেল শিল্পীরা এখন বিভিন্ন রাজ্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বিভিন্ন দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে, পরিবারের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ ছেড়ে। এই শিল্পীরা, যারা শান্তিপুর থেকে অসম এবং বনগাঁর মতো স্থানে যাচ্ছেন, নিজেদের পরিবারকে রেখে কর্মক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। শান্তিপুরের এই শিল্পীদের একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে, কিন্তু অনেকেই বর্তমানে জীবন্ত মডেল পেশায় চলে এসেছেন। বর্তমানে শান্তিপুরে প্রায় ১০-১২টি সংস্থা রয়েছে, যেখানে প্রতিটি সংস্থায় ৩০ থেকে ৭০ জন সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে "অঙ্কুশ জীবন্ত মডেল গ্রুপ" নামক একটি সংস্থা দুর্গাপুজোর জন্য ত্রিপুরায় তাঁদের প্রদর্শনী করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
যেদিন তারা রওনা হল, ওই গ্রুপের ২৬ জন শিল্পী, যার মধ্যে ১১ জন মহিলা, ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে বের হলেন। তারা শান্তিপুর থেকে নবদ্বীপ ধাম স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে, সেখান থেকে ভোরবেলা ট্রেনে করে রওনা দিলেন। তাঁরা টানা ন’দিন পারফর্ম করবেন, উৎসবের দুদিন আগে থেকে শুরু করে বিজয়া দশমী পর্যন্ত। এরপর লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে আবারও প্রদর্শনী করবে, তারপরই ফিরবেন।
অবশ্যই, বাড়তি উপার্জনের আনন্দ কিন্তু তাদের দুর্গাপুজোর আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত এই শিল্পীরা, তাঁদের কাজের জন্য উৎসবের আনন্দ থেকে দূরে রয়েছেন। এই পরিস্থিতি তাদের পেশার চ্যালেঞ্জ এবং সাংস্কৃতিক উদযাপনের মধ্যে একটি কঠিন ভারসাম্য বজায় রাখার কথা মনে করিয়ে দেয়।