নিজস্ব সংবাদদাতা: বাংলার রূপকার, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, ধন্বন্তরি ডাক্তার, একটা নয়, তিন তিনটে পরিচয় তাঁর। যে দিনে জন্ম, সেই দিনেই মৃত্যু। তিনি তাঁর কাজের জায়গায় সর্বসেরা। দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছিল তাঁর নাম। তিনি ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়। চিকিৎসা জগৎ এবং বাংলার রাজনীতির এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব তিনি।
ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি তৎকালীন রাজনৈতিক মহলে বিরোধীদের কাছ থেকেও যথাযথ সম্মান পেয়েছিলেন। ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় মন দিয়েছিলেন বড়লোক বাবার সুন্দরী মেয়েকে। মন প্রাণ দিয়ে ভালবাসলেও অসম্পূর্ণ থেকে যায় ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের প্রেম কাহিনী। সাধারণ মানুষের জন্য লড়ে যাওয়া মানুষটার ভালবাসার অধ্যায়টা অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছিল।
ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় নিজের ভালবাসার মানুষকে উৎসর্গ করেছিলেন এক বিশেষ উপহার। তখনকার সময়ে বিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন ডাঃ নীলরতন সরকার। তাঁর নামেই আজকের নীলরতন সরকার হাসপাতাল। সবে সবে ডাক্তারি পাশ করেছেন বিধান চন্দ্র রায়। একটু একটু করে শুরু করেছেন ডাক্তারির প্র্যাকটিসও। তিনি ছিলেন সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারের ছেলে। জানা যায়, নীলরতন সরকারের ছোট মেয়ে কল্যাণীকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়। দু' দিক থেকেই ছিল সম্মতি অর্থাৎ, কল্যাণীও রাজি ছিলেন।
কিন্তু এই সম্পর্কের ছন্দপতন ঘটল যখন নীলরতন সরকার এই সম্পর্কের বিষয়ে জানতে পারেন। এরপর তিনি ডেকে পাঠালেন বিধানকে। নীলরতন সরকার বিধান চন্দ্র রায়ের কাছে জানতে চান, তাঁর রোজগার কত? কিন্তু বিধান চন্দ্র রায়ের রোজগারের অঙ্কটি শুনে নীলরতন সরকারের জবাব ছিল, তাঁর মেয়ের হাতখরচ এর থেকে অনেক বেশি।
ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন, এই সম্পর্ক পরিণতি পাবে না। শোনা যায়, এরপরেই নাকি বিধান চন্দ্র রায় পাড়ি দেন ইংল্যান্ডে। উদ্দেশ্য ছিল, আরও বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করা। পড়াশোনা শেষ করে যখন তিনি দেশে ফিরলেন, ততদিনে নাকি আর জীবিত ছিলেন না কল্যাণী। এই কারণেই কী চিরকুমার থেকে যান ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় ? রয়েছে এমন প্রবাদ।
কল্যাণী কিন্তু সারা জীবন থেকে গিয়েছিলেন তাঁর মনে। ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় কলকাতা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে শান্ত নিরিবিলি জায়গায় তৈরি করেছিলেন কল্যাণী শহর। নদীয়া জেলার অন্তর্গত একটি জায়গায় তিনি তৈরি করেছিলেন এইসুন্দর শহর। অনেকেই মনে করেন যে, প্রিয়তমা কল্যানীর সঙ্গে অসম্পূর্ণ পরিণয়ের সমিতি থেকেই তিনি এই নামটি বেছে নিয়েছিলেন। যদিও অনেকের মত, বিষয়টি সম্পূর্ণ কাকতালীয়।