নিজস্ব সংবাদদাতাঃ পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও সারা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পালন করা হয় দোলযাত্রা। রঙের এই উৎসব ফাল্গুন-চৈত্র মাসের দিকেই পালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের বহু জায়গায় দোলযাত্রা বিরাটভাবে পালিত হয়। জানেন কি রাজ্যের কোন কোন জায়গাগুলিতে বড় করে এই রঙের উৎসব পালন করা হয়?
দোলযাত্রা বা দোল পূর্ণিমা উদযাপিত হয় এবং এই উৎসবটি ভগবান কৃষ্ণকে উৎসর্গ করা হয়। এটি প্রায়শই উত্তর-ভারতীয় হোলি উৎসবের দিন বা তার আগের দিনের সাথে মিলে যায়। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ওড়িশা এবং অন্যান্য রাজ্যের কিছু অংশে একইভাবে উদযাপিত হয় এই দোলযাত্রা। দিনটি বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে বছরের শেষ উৎসবকেও চিহ্নিত করে।
সারা ভারতে বিভিন্ন জায়গায় হোলির উৎসব পালিত হলেও পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গায় দোলযাত্রা পালন করা হয়। দোল পূর্ণিমার দিনটিকে খুব শুভ বলে মনে করা হয়। তাই রাজ্যে এদিন কোথাও পালন করা হয় বসন্ত উৎসব, আবার কোথাও পালন হয় রাধা-কৃষ্ণের বিশেষ পুজো।
শান্তিনিকেতন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্ব প্রথম শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব চালু করেছিলেন। সমগ্র বোলপুর-শান্তিনিকেতন দোলযাত্রা উপলক্ষ্যে বড় করে বসন্ত উৎসব পালন করে। এছাড়াও এদিন বিশেষ উৎসব হয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। উৎসবের দিন সকালে বৈতালিক হয়। তার পরে ছাত্রছাত্রীরা গানে-নাচে উদ্যাপন করেন বসন্ত উৎসব। এই বসন্ত উৎসব উপলক্ষ্যে দেশ বিদেশের প্রচুর মানুষ শান্তিনিকেতন এবং বোলপুরে এসে ভিড় করে।
নবদ্বীপ: নদিয়া জেলার অন্তর্গত নবদ্বীপ শ্রী চৈতন্যদেবের জন্মভূমি হিসেবে বিখ্যাত। এছাড়াও এখানে প্রচুর রাধাকৃষ্ণের মন্দির রয়েছে। দোলযাত্রার দিন এখানে বিশেষভাবে অনুষ্ঠান পালন করা হয়। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পুজো হয়। সঙ্গে পুজো হয় রাধা-কৃষ্ণেরও। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, এদিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির নিয়ে রাধার সঙ্গে রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই জন্যে নবদ্বীপেও আবির খেলা হয়।
মায়াপুর: নবদ্বীপের মতন মায়াপুরও দোলযাত্রার উৎসব পালনের জন্য বিখ্যাত। এখানে এক মাস আগে থেকে শুরু হয়ে যায় দোলযাত্রার প্রস্তুতি। দেশের তো বটেই বিদেশের পর্যটকরাও আসেন এই উৎসব দেখতে।
এছাড়াও, পুরুলিয়ার নিমদিতে বড় করে বসন্ত উৎসব পালন করা হয়। দেশ বিদেশের পর্যটকরা এখানে আসেন রঙের উৎসব পালন করতে। ছৌ নাচ, দরবারি ঝুমুর, নাটুয়া নাচ, বাউল গানের মতো অন্যান্য আকর্ষণও থাকে এই অনুষ্ঠানে। বিষ্ণুপুরের মদন মোহন মন্দিরেও বড় করে পালিত হয় দোলযাত্রা। রাধা-কৃষ্ণের মন্দির সংলগ্ন এলাকায় দোলযাত্রার উৎসব দেখতে হাজির হন বহু পর্যটক।