হাবিবুর রহমান, ঢাকা : বাংলাদেশে নানা আয়োজনে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। বাংলাদেশে বিহার গুলোতে ছিলো উৎসাহ উদ্দীপনা ও উৎসব মুখর পরিবেশ। হিংসা-বিদ্বেষ বিভেদ পরিহার করে মানুষে মানুষে সৌভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় প্রতিষ্ঠাই ছিল মূল লক্ষ্য। প্রত্যেক বিহার গুলোতে বুদ্ধ পূজা, বুদ্ধ মূর্তিদান, সংঘ দান, অষ্ট পরিস্কার দান, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিন্ডদান ও নানাবিধ দান এছাড়া সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস বাতি উড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে বিহারগুলোর প্রাঙ্গণে এসে সমবেত হয়। সেখানে পঞ্চশীল গ্রহণের পর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর-নারী, দায়ক-দায়িকা, উপসেক-উপাসিকারা চন্দনের জল ও ফুল নিয়ে বোধি বৃক্ষমূলে চন্দন জল সিঞ্চনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেন। পরে বিহারের সমবেত হয়ে পঞ্চমশীল গ্রহণ এবং হাজার প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতীর মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। প্রার্থনায় রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার, কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের বৌদ্ধ ভিক্ষু ও শত শত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর-নারী দায়ক-দায়িকা অংশ নেন।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বক্তব্য রেখেছেন। এছাড়াও বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টেয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ উপলক্ষে বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য এক সম্বোর্ধনার আয়োজন করেন। গৌতম বুদ্ধের জন্মদিন বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে রাষ্ট্র প্রধান এবং তার পত্নী ড. রেবেকা সুলতানা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পূর্ণিমা তিথিতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন করে আসছেন। এ দিন গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভের জন্য ২৯ বছর বয়সে গৃহত্যাগ করেন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় গুরুর কাছে শিষ্যত্ব গ্রহণের পর নিরঞ্জনা নদীর তীরে এক অশথ বা বটবৃক্ষ মূলে ছয় বছর কঠোর তপস্যার পর বৌদ্ধত্ব লাভ করেন। বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্মগ্রহণ করেছিলেন নেপালেরলুম্বিনী কাননে। এ দিনটিতেই বুদ্ধের জন্ম ও প্রয়াণ তাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যময়।