New Update
দিগ্বিজয় মাহালী, ওড়িশা : ৫১৬ বছর আগে হঠাৎ করে শুরু হয় দুর্ভিক্ষ। মহামারি। প্রজাদের মঙ্গলকামনায় দুর্গাপুজো শুরু করলেন জলেশ্বরের জমিদার রামচন্দ্র ঘোষ। সেই থেকেই সেই রীতি রেওয়াজ মেনে আজও পূজিতা হয়ে আসছেন দেবী দুর্গা। ওড়িশার জলেশ্বরের সুবর্ণরেখা নদীর পাশেই অবস্থিত লক্ষ্মণনাথের জমিদারি বাড়ি। সেখানেই হয় দুর্গাপুজো।তবে বর্তমানে এই পুজো বাংলা এবং ওড়িশার মেল বন্ধন হিসেবে গড়ে উঠেছে৷ কারণ ওড়িশা রাজ্যের পুজো হলেও বাংলা থেকে হাজার হাজার লোক যায় এই পুজোয় সামিল হতে৷
পুজোর দিনগুলিতে বাঙালির অন্যতম শ্রেষ্ঠ গন্তব্য বাংলার পিঠে পিঠ ঘেঁষে থাকা ওড়িশার প্রবেশদ্বার লক্ষ্মণনাথের সুদৃশ্য রাজবাড়ি বা জমিদার বাড়ি। একদিকে সবুজ ছায়া সুনিবিড় বনানীর পাশ দিয়ে বয়ে চলা শান্ত স্নিগ্ধ সুবর্ণরেখা আর অন্য দিকে লক্ষ্মণনাথ গড়ের সুবিশাল রাজবাড়ি। সেই সঙ্গে বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোর আয়োজন। এসব কিছুর সাক্ষী থাকতে বেরিয়ে পড়ুন। দশমী পর্যন্ত যে কোনো একটি দিনকে নির্বাচন করলেই আপনি সাক্ষী হতে পারবেন ৫০০ বছর পেরিয়ে যাওয়া এক ঐতিহাসিক দুর্গাপুজোর। আর তারপরেই আবিস্কার করবেন এক আশ্চর্য অনুভূতি। গত টানা দু'বছর বন্ধ ছিল ঐতিহাসিক এই দুর্গাপুজো। নিয়ম রক্ষার স্বার্থে ঘটপুজো সারতে হয়েছিল উদ্যোক্তাদের। প্রবেশ বন্ধ ছিল ঐতিহাসিক রাজবাড়ির ভেতরে। করোনা অতিমারীর সেই দুশ্চিন্তা কাটিয়ে এবছর আবার স্বমহিমায় আবির্ভূতা হবেন মৃন্ময়ী দেবী দশভুজা, মহাশয় গড়ের ঠাকুর দালানে। চোখ জোড়ানো মূর্তি আর পুজোর আচার আপনাকে সম্মোহিত করবেই। তবে, তন্ময় হয়ে পুজোর দৃশ্য উপভোগ করতে অবশ্যই ভুলে যাবেন না রাজবাড়ির ভেতরটা একবার ঘুরে আসতে। কারণ, এই রাজবাড়ি বা জমিদারবাড়ির কোনায় কোনায় লুকিয়ে রয়েছে নানান কাহিনী। সকলের থেকে অন্যতম বিষয় ওড়িশার পুজো হলেও বাংলা থেকে হাজার হাজার মানুষ সমাগম হয়। রীতি মেনেই হয় সন্ধি পুজো,কুমারী পুজো,বসে বিশালাকার মেলা, বর্তমানে ৪২ জনের দুর্গাপুজোর কমিটিও রয়েছে।নাম লক্ষ্মণনাথ দুর্গাপুজো কমিটি। তারাই পুজো বিষয়টি দেখভাল করছে। রাজবাড়ী ও মন্দির রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে বেশ কয়েকজন৷ জমিদারের বংশধরেরা থাকেন কলকাতায়। তবে পুজোর দিন গুলোতে সপরিবারেই থাকে লক্ষ্মণনাথে।তাই এ বছরের পুজোয় যদি পারেন একবার ঘুরে আসুন লক্ষ্মণনাথে। কলকাতা থেকে ট্রেনে জলেশ্বর স্টেশন।তারপর টোটো,অটো,প্রাইভেট কারে ১০ কিমি বা কলকাতা থেকে খড়গপুর। খড়গপুর থেকে ওড়িশা রোডে অবস্থিত লক্ষ্মণনাথ।পুজোর সময় যদি একদিন কাটাতে পারেন এই জায়গায় তাহলে অনেক অজানা ইতিহাস আপনি জানতে পারবেন।