রানীগঞ্জ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রানীগঞ্জের চাষবাস প্রধান নুপুর এলাকায় চাষীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের জন্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রানীগঞ্জ সমষ্টি উন্নয়ন দফতর। চাষীদের বিভিন্ন অভিযোগ ও অভাবের কথা শুনে এবং প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল নষ্টের বিষয়টি নজর রেখে ৬ কিলোমিটার সেচ নালা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের ইরিগেশন ডিপার্টমেন্ট। সেই বিষয়েকে নজর দেওয়ার লক্ষ্যে ও কাজের গতিপ্রকৃতি কিরকম ভাবে এগোচ্ছে সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে শুক্রবার রানীগঞ্জের বল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নুপুর গ্রাম এলাকা পরিদর্শনে এলেন সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সহ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং সদস্যরা। উল্লেখ্য, এর আগে প্রতিবছরই অতিবৃষ্টির কারণে প্লাবিত হয় নুপুর এলাকার বিশাল পরিমাণ চাষযোগ্য জমি। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে সেচ নালা ও ক্যানেল গড়ে তুলে জল যাতে নির্দিষ্ট পথে যায় তার উদ্যোগ নিয়েছে দফতর। প্রথম পর্যায়ে আনুমানিক তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই জল নিকাশি সেচ নালা গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা জুড়ে এই সেচ নালা করা হবে বলে জানিয়েছেন সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অভিক ব্যানার্জি। তিনি এদিন প্রাথমিক পর্যায়ে ৬৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করে গড়ে ওঠা এই নিকাশি নালার নির্মাণ কাজ সরজমিনে খতিয়ে দেখতে এসে চাষীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভাব ও অভিযোগের কথা শোনেন। চাষিরা জানিয়েছেন, এই নিকাশি নালা তৈরির সময় লকগেট নির্মাণ, কালভার্ট নির্মাণ ও ক্যানেলের দুই পাড়ের মাটি ড্রেসিং করার প্রয়োজন আছে যার ফলে ক্যানেলে জল বয়ে গেলেও মাটি ক্যানেল এর মধ্যে ঢুকে গিয়ে ক্যানেলে জল যাতায়াতের পথ বন্ধ করতে পারবে না। সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এই সমস্যাগুলি কিভাবে দ্রুত সমাধান করা সম্ভব তা নিয়ে আলোচনায় বসবেন বলে জানান। সেখানে এদিন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিলোনিয়া জানান, সমস্ত কাজ তিনি ঘুরে দেখেছেন। তবে কন্ট্রাক্টর যে কাজ করেছেন সে কাজে তিনি খুশি নন। মূলত বর্ষাকালে রানীগঞ্জ শহর এলাকার জল রাজারবাঁধ জলাশয় দিয়ে আসার পর তা নালার মাধ্যমে নুপুর এলাকায় এসে পৌঁছলে ওই অংশের বিস্তীর্ণ জমি জলে প্লাবিত হয়। অতি বৃষ্টির সময় এই বিষয় লক্ষ্য করা যায়। এরফলে প্রতি বছরই কয়েক লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে ৪ ফুট গভীর ও ১৪ ফুট চওড়া সেচ নালা প্রথম পর্যায়ে ৩ কিলোমিটার এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে। আর তা বর্ষার আগে সম্পূর্ণ করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও চাষীদের বাকি সমস্যাগুলো যাতে সমাধান হয় তা নিয়ে সংস্থার ভাবার প্রয়োজন রয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, আগামীতে কিভাবে কৃষকদের সমস্ত সমস্যার সমাধান হয় সেই বিষয়ে বৈঠক করে সমাধান সূত্র বার করবেন তিনি। এদিনের এই পরিদর্শন কর্মসূচিতে সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অভিক ব্যানার্জি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনোদ নুনিয়া, বল্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মমতা প্রসাদ, উপপ্রধান সিধান মণ্ডল, স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শিবরাম কারার, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মলয় বাউড়ি ও পঞ্চায়েতের সদস্যরা।
চাষীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ
New Update